ভোটের কাজে যাওয়া এক পার্শ্বশিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
রবিবার ইলামবাজার থানার ঘুড়িষা পঞ্চায়েতের তিনোর গ্রামের ঘটনা। ওই ঘটনায় এ দিনই সংশ্লিষ্ট বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত ভোটকর্মী। ফোনে তিনি ঘটনার কথা সবিস্তারে জানিয়েছেন ইলামবাজার থানার ওসি-কেও। এ দিন বারবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি ইলামবাজারের বিডিও উৎপল পাতসা। জবাব দেননি এসএমএসের-ও। প্রতিক্রিয়া দেননি এসডিও (বোলপুর) শম্পা হাজরাও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ৫ এপ্রিল থেকে ওই গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক মোজাম্মেল হক বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৬৮ নম্বর পার্টের ভোটার স্লিপ বাড়ি বাড়ি ঘুরে দিচ্ছেন। এ দিন রবিবার ছুটির দিন থাকায় বাকি শ’দেড়েক স্লিপ দেওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন তিনি। মোজাম্মেলের অভিযোগ, “বাড়ি বাড়ি ভোটার স্লিপ দেওয়ার সময়ে স্থানীয় কয়ে কজন যুবক পিছু নেয়। আমার সঙ্গে ঘুরে তৃণমূলের হয়ে প্রচার করতে শুরু করে। আমি তাঁদের বলি, এটা নিয়ম বিরুদ্ধ। হয় আপনারা অন্য জায়গায় প্রচারে যান অথবা আমি এই কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছি।’’ তখনই তাঁদের মধ্যে দু’জন মারমুখী হয়ে মোজাম্মেলকে ধাক্কা দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ। অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেওয়ারও হুমকি দেয়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তিনি স্লিপ দেওয়ার কাজ বন্ধ রাখেন।
ওই ভোটকর্মীর দাবি, গোটা ঘটনার কথা তিনি লিখিত ভাবে ইলামবাজারের বিডিও-কে জানিয়েছেন। ইলামবাজার থানার ওসি-কেও বিষয়টি ফোনে জানানো হয়েছে। মোজাম্মেলের বক্তব্য, ‘‘প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা না পেলে আজ, সোমবার বাকি থাকা স্লিপ বিডিও অফিসে জমা দেব। থানায় লিখিত অভিযোগও জানাবো।”
এ দিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বছর পঞ্চান্নর ওই পার্শ্বশিক্ষক এর আগেও গ্রামে একাধিক ভোটের কাজ করেছেন। কিন্তু, কোনও দিন কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা ঝামেলা হয়েছে বলে নজির নেই। এলাকায় সুনামের সঙ্গেই তিনি শিক্ষকতার কাজ করে আসছেন। এমন নির্বিবাদী এক ব্যক্তির সঙ্গে কীসের আক্রোশে এমন ব্যবহার করা হল, বুঝে উঠতে পারছেন না ওই গ্রামের অনেকেই। অভিযুক্ত ওই যুবকদের সঙ্গে যদিও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।
অন্য দিকে, শনিবার দুপুরে ইলামবাজারে জোট প্রার্থীর জনসভা থেকে ফেরার পথে সিপিএমের তিন কর্মী-সমর্থককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মঙ্গলডিহি এলাকার বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ওই ঘটনায় জড়িত বলে সিপিএমের দাবি। এই মর্মে রবিবার নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব।
দু’টি অভিযোগই মানতে চাননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।