ফাইল চিত্র।
গত বছর দীপাবলির রাতে খাটের নীচে লুকিয়ে ছিল পগাই। এক বার খাবারের বাটিটা দেখে গুটিগুটি চারপায়ে এগিয়ে আসতেই বাইরে শুরু হয় চকলেট বোমার দাপট। ভয়ার্ত কুকুরছানাটি মুখের খাবার ফেলে ফের আশ্রয় নিয়েছিল খাটের তলায়। বাড়িসুদ্ধ লোক অনেক ডাকাডাকি করেও সারা রাত তাকে আর বার করতে পারেননি।
এ বার অবশ্য পগাইদের জন্য সুসংবাদ। শুধু মানুষজন নয়, কালীপুজোর রাতে শব্দবাজির দাপটে পশুপাখিদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য আবেদন জানাল পুলিশ। মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইটে কলকাতা পুলিশের আবেদন ‘‘দায়িত্ব সহকারে উদ্যাপন করুন, এটা আমাদেরও দীপাবলি!’’ পাশে কম্বল জাতীয় জিনিস দিয়ে মাথা ঢাকা একটি পোষ্য কুকুরের ছবি।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের দাবি, এ বার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বাড়ির পোষ্যও যদি শব্দবাজির আওয়াজে অসুবিধা বোধ করে তা হলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। গত ক’বছর ধরে শব্দবাজির দাপটে অসুস্থ বা অসুবিধা হওয়ার ভুরিভুরি অভিযোগ জমা পড়ছে পুলিশের কাছে। কিন্তু পোষ্যদের অসুবিধা হলে অসহায় অপেক্ষা ছাড়া কিছু করার থাকে না পোষ্যের মালিকের। গত ক’বছর ধরেই কিছু পশুপ্রেমী সংগঠন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে আসছিল।
এ বছরেও বহুতলগুলির দিকে বাড়তি নজর রাখবে পুলিশ। মঙ্গলবার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহায়তায় গড়িয়াহাট থানা শিশুদের নিয়ে সচেতনতার প্রসারে মিছিল বের করে। নিউ আলিপুর, শেক্সপিয়র সরণি-সহ একাধিক থানার পুলিশও এ দিন বিভিন্ন আবাসনে গিয়ে শব্দবাজি না ফাটানোর আবেদন জানায়। লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩১৭৬ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি। কালীপুজোর দিন শহর জুড়ে ২৪৫টি রাস্তায় পিকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, ৪১টি ওয়্যারলেস পাইলট গাড়ি, ২১টি কুইক রেসপন্স টিম ও ২৩টি হাই রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড ছাড়াও ছোট রাস্তায় নজরদারি রাখতে ১০০টি অটোর ব্যবস্থাও থাকছে। ওই দিন রাস্তায় থাকবে অতিরিক্ত ৩০০০ পুলিশ। লালবাজার ছাড়াও শহরের চার জায়গায় সাব কন্ট্রোল রুম, ২৭টি ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। ভাইফোঁটা পর্যন্ত এই ব্যবস্থা থাকবে। লালবাজার সূত্রে খবর, শহরে বারোয়ারি কালীপুজোর সংখ্যা ৩৫৮৪টি। এর মধ্যে ২৫টি মণ্ডপে প্রতিমার গায়ে গয়না থাকে। সেগুলিতে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার। এ ছাড়াও কালীঘাট-সহ শহরের সতেরোটি মন্দিরে অতিরিক্ত পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা থাকছে।