নোটবন্দির সময় পিনকন কর্তা ও তাঁর সহযোগীরা ৩০ শতাংশ ‘কাটমানি’র বদলে কয়েক শ’কোটি টাকা ঘরে তুলেছিলেন বলে দাবি করছেন রাজস্থানের জয়পুর পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অফিসাররা। নোটবন্দির সময়ে সংস্থার রেডক্রস প্লেস ও শেক্সপিয়র সরণি অফিসে এ ধরনের লেনদেন চলত তাঁরা জানিয়েছেন। সংস্থার তরফে অবশ্য এ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে।
বেঙ্গালু থেকে ২ নভেম্বর পিনকন-কর্তা মনোরঞ্জন রায়-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। এক তদন্তকারীর কথায় মনোরঞ্জন ছাড়া ৩ কর্তাকে আলাদা করে জেরা করা হচ্ছে। এ রাজ্যে পিনকনের মালিকানায় ১২টি মদের দোকান রয়েছে। ওই ১২টি দোকানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও নোট বদল করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।
গোয়েন্দাদের কথায়, নোটবন্দির সময় মনোরঞ্জনের অনুগামীরাও ১০০ টাকায় ৭০ টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে বাজারে নেমে পড়েছিল। সরকারি আমলা ও রাজনৈতিক নেতা-সহ বিভিন্ন প্রভাবশালী লোকের কালো টাকা পিনকন অর্থ লগ্নি সংস্থা ও পিনকন স্পিরিটের নানা কোম্পানির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বদল করা হয়েছে।
জয়পুর এসওজি-র এক কর্তা জানান, তাঁরা ২০১৬-এর ৮ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পিনকন গোষ্ঠীর বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা ও পিনকন স্পিরিটের সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখছেন। ওই সময় কী পরিমাণ টাকা জমা পড়েছিল এবং ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে পরবর্তী পর্যায়ে কোন কোন অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর ফলে ফাঁসতে পারেন বেশ কিছু প্রভাবশালী লোক। এসওজি-র এক কর্তা জানিয়েছেন, তদন্তকারী দলে দু’জন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টও রয়েছেন। ২০১৬-র ৮ নভেম্বর থেকে ২০১৭-র অক্টোবর পর্যন্ত সব ব্যাঙ্ক আকাউন্টের খতিয়ান নেওয়ার কাজ চলছে।
এসওজি-র ওই কর্তার দাবি, জেরায় অনেক সরকারি আমলা ও নেতার নাম উঠে এসেছে। আদালতগ্রাহ্য প্রমাণ তৈরির জন্যই ওই সব অ্যাকাউন্টের লেনদেনের নথি প্রয়োজন। তার পরেই এঁদের ডাকা হবে। ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রকে একটি তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই তালিকার ভিত্তিতে অর্থ মন্ত্রক তদন্ত শুরু করেছে বলেও দাবি করছেন তদন্তকারীরা। কালো বাজারে নগদ টাকা বিদেশি মু্দ্রায় বদল করা হতো বলেও দাবি তদন্তকারীদের। সংস্থার তরফে অবশ্য স্টক এক্সচেঞ্জকে চিঠি দিয়ে অবশ্য বলা হয়েছে, রাজস্থান পুলিশের অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন।