চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদার। — ফাইল ছবি।
চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হলেন তাঁর একত্রবাসের সঙ্গী চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারী। তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কৌশিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিজের সুইসাইড নোটেও কৌশিককে মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন প্রজ্ঞাদীপা।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল কৌশিক সেনাবাহিনীর চিকিৎসক। ব্যারাকপুরের সেনা হাসপাতালে কর্মরত। শুক্রবার সকালে ব্যারাকপুরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে কৌশিককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত সোমবার ব্যারাকপুর সেনাছাউনির অফিসার্স কোয়ার্টার্স ‘ম্যান্ডেলা হাউস’-এর ২০ নম্বর ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে ৩৭ বছরের প্রজ্ঞাদীপার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দেহের পাশেই উদ্ধার হয়েছিল সুইসাইড নোট। ছেঁড়া পাতায় নীল কালিতে তাতে লেখা ছিল, ‘‘যে প্রহারের দাগ নিয়ে চলে গেলাম / এর শোধ কেউ নেবে। / আমার মৃত্যুর জন্য কৌশিক দায়ী।’’ প্রজ্ঞাদীপার মাসতুতো দাদা কুমারশঙ্কর দাস মঙ্গলবার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই তদন্তে নামে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করেছিল, আত্মহত্যা করেছেন প্রজ্ঞাদীপা।
বৃহস্পতিবার চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, প্রজ্ঞাদীপার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি মৃত্যুর অব্যবহিত আগের বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। যে ঘর থেকে ওই চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। বিছানার পাশেই টেবিলের উপরে রাখা ছিল মদের বোতল, কাচের গ্লাস। গ্লাসে তখনও ছিল পানীয়। বালিশ, বিছানা লন্ডভন্ড ছিল। মেঝেতে জিনিসপত্র ছড়িয়ে পড়ে ছিল। তরুণীর সঙ্গী মদ্যপান করে মারধর, যৌন নির্যাতন করেছিলেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। চিকিৎসকের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দ তৈরি হয় পুলিশের মনে। এই বিষয়ে মুখ খোলেনি সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড।