আগে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতারের সময় প্রিজন ভ্যানে রাকেশ। —ফাইল চিত্র
তাঁর বাড়িতে গিয়েও বাধার মুখে পড়ে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ বার সেই বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহ গ্রেফতার কলকাতা বিমানবন্দরে। সোমবার গভীর রাতে দিল্লি থেকে ফেরার সময় বিমানবন্দরেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ওয়াটগঞ্জ থানায় পুরনো একটি মামলার সূত্রে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও রাকেশের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য, সাজানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে রাকেশকে। যদিও রাকেশের গ্রেফতারি নিয়ে পুলিশের তরফে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানা এলাকার বাসিন্দা রাকেশ সিংহ দাপুটে কংগ্রেস নেতা ছিলেন। লোকসভা ভোটের কিছু দিন আগেই যোগ দেন বিজেপিতে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাকেশের দিল্লি থেকে ফেরার খবর পেয়েই তাঁকে গ্রেফতারের ছক কষতে শুরু করে পুলিশ। সোমবার রাত একটা নাগাদ বিমানবন্দরে চেক আউট করে বেরনোর পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
রাকেশ অবশ্য আগেও গন্ডগোল পাকানো, হামলা, ভয় দেখানো, হুমকি, সরকারি কাজে বাধাদান-সহ বিভিন্ন মামলায় বেশ কয়েক বার গ্রেফতার হয়েছেন। তবে জামিনে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছেন। কিছু দিন আগে ফের তাঁকে গ্রেফতারের জন্য গেলে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল রাকেশের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। দুই পুলিশ অফিসারকে আটকে রাখার অভিযোগও ওঠে। যদিও রাকেশের দাবি, বিনা কারণে, বিনা ওয়ারেন্টে তাঁকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিল পুলিশ। পুলিশ তাঁকে গাড়ি চাপা দিয়ে মারার পরিকল্পনা করেছিল বলেও অভিযোগ ছিল রাকেশের। ওই সময়কার গোটা ঘটনার ভিডিয়ো তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন রাকেশ। সেই ভিডিয়ো নিয়েও বিতর্ক ছড়ায়।
সোমবার রাতে গ্রেফতার হওয়ার পর পরই রাকেশ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। ঘটনার উল্লেখ করে রাকেশের দাবি, ওই ঘটনার পর থেকেই ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ একাধিক ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করেছে। সেই সব মিথ্যে মামলাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ফেসবুক পোস্টে রাকেশের মন্তব্য, ‘‘আমি মমতা সরকারের সামনে মাথা নত করব না এবং আমার ভারতীয় জনতা পার্টিক কর্মকর্তারা এর বিরুদ্ধে আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই লড়তে প্রস্তুত।
আরও পডু়ন: কাটমানি! ক্ষুব্ধ মমতা, ভোটের ফল বিশ্লেষণে বার্তা দলকেও
ফাঁসানোর অভিযোগ তুলেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বও। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়েই একের পর এক সাজানো মামলায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। এটাও তাই। ওই রকমই কোনও সাজানো মামলা। এ ভাবে বিজেপিকে বিপাকে ফেলা যাবে না। দলে আলোচনা করে দেখছি, কী পদক্ষেপ করা যায়।’’
আরও পড়ুন: কলেজে ভর্তি নাকি সব অনলাইনে! অফলাইনে ‘অফার’ ৪০ হাজারের
কলকাতায় অমিত শাহের রোড শোয়ে বিদ্যাসাগর মূর্তি ভাঙার ঘটনার পর এই রাকেশ সিংহেরই একটি বিতর্কিত ভিডিয়ো সামনে এসেছিল। ওই ভিডিয়োতে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায় রাকেশকে। যদিও তাঁর দাবি ছিল, ‘‘তিনি ফেসবুকে যা বলেছিলেন, তার পুরোটা সংবাদ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়ায়নি। একটি অংশ কেটে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুরোটাই ছিল তাঁকে ফাঁসানোর চক্রান্ত।