অলীক চক্রবর্তী।
ভাঙড়-কাণ্ডে ধৃত নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তীকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি করাল পুলিশ।
অলীকের শারীরিক অবস্থা ঠিক কেমন, তা জানার জন্য রবিবার সকালে তাঁকে নিয়েই বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে যায় পুলিশ। চিকিৎসকেরা অলীকের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখেন। এর পরেই চিকিৎসকেরা পুলিশকে জানান, অলীক জটিল আলসারে আক্রান্ত। তাঁর পাকস্থলীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রয়োজনে হাসপাতালে রেখে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে পুলিশ। এর পরেই বারুইপুর জেলা পুলিশের কর্তারা সিদ্ধান্ত নেন অলীককে দক্ষিণ কলকাতার ওই নার্সিং হোমে ভর্তি করানোর।
ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড বিরোধী জমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ অলীককে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্র-বিরোধী কার্যকলাপ-সহ একাধিক অভিযোগে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ হাসপাতালের সামনে থেকে ধরে বারুইপুর জেলা পুলিশ। শনিবার বারুইপুর আদালতে অলীকের আইনজীবী তাঁর মক্কেলকে এসএসকেএম হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার আবেদন করলেও তা খারিজ হয়। পুলিশকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়।
অলীকের স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছেন ভাঙড় আন্দোলনে আর এক নেত্রী, তাঁর স্ত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘অলীকের উপরে অনেক মিথ্যা মামলা চাপানো হয়েছে। দেড় বছরে অলীক যে ধরনের চিকিৎসা পরিষেবায় থাকতে পারতেন, তা তিনি পারেননি। তাঁর যে অবস্থার অবনতি ঘটেছে, এ জন্য পুরোপুরি রাজ্য সরকার দায়ী।’’ পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ অভিযোগ নস্যাৎ করে দাবি করেন, ‘‘অলীকের বিরুদ্ধে কোনও মিথ্যা মামলা চাপানো হয়নি। তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
শর্মিষ্ঠা নিজেও এখন জামিনে মুক্ত। জামিনের শর্ত হিসাবে ভাঙড়ে কাশীপুর থানা এলাকায় তাঁর প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে অলীকের সঙ্গে হাসপাতালে তাঁর দেখা করতে আইনত কোনও বাধা নেই। তা সত্ত্বেও হাসপাতালে দেখা করতে দিতে জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে বলে ভাঙড়ের জমি আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগ। অলীকের গ্রেফতারের পর থেকেই ভাঙড়ের জমিরক্ষা কমিটি নানা কর্মসূচি নিয়ে চলেছে। বিভিন্ন গ্রামে এ দিন সন্ধ্যা থেকে মশাল ও লাঠি নিয়ে মিছিল, প্রতিবাদ সভা হয়। মাছিভাঙা এবং খামারআইট গ্রাম এক ঘণ্টা নিষ্প্রদীপ রাখা হয়েছিল।