শঙ্খ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
ভাঙড়ের গণআন্দোলনকারীদের সঙ্গে নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট জনেরা অনেকে এ বার সুর মেলালেন।
সোমবার মৌলালি যুব কেন্দ্রে ভাঙড় আন্দোলন সংহতি কমিটির ডাকে নাগরিক সম্মেলনে শঙ্খ ঘোষের লিখিত বিবৃতি পড়া হয়েছে। পাওয়ার গ্রিডের বিস্তার নিয়ে ভাঙড়ের গ্রামবাসীদের সঙ্গে সরকারের সংঘাত প্রসঙ্গে তাতে বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় গ্রামবাসীরা আজ ধারাবাহিক সংঘর্ষ, খুন, কারাবাস আর পুলিশি নির্যাতনের শিকার। স্বাভাবিক জীবন সেখানে (ভাঙড়ে) আজ সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।’ তাঁর খেদ, ‘আমাদের গোটা দেশের দুর্ভাগ্য, যে কোনও সঙ্গত দাবি বা বিক্ষোভের প্রকাশকেও সরকার পক্ষ যেন ধরে নেন কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দলের ষড়যন্ত্র।’ তবে রাজ্য সরকার এখনও কিছু সদর্থক কাজ করছেন বলে আশা রেখে প্রবীণ কবির আর্জি, ‘স্বস্তিজনক, মঙ্গলকর’ সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর লক্ষ্যে সরকার পক্ষের লোকজন গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন, ইতিহাসবিদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়রাও লিখিত বিবৃতিতে একই দাবি তুলেছেন।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এখনও ভাঙড়ে জমি আন্দোলনটিকেই কার্যত অস্বীকার করে চলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই জমি আন্দোলনের নেত্রী বলে দাবি করে পার্থবাবুর মন্তব্য, ‘‘এখানে জমি আন্দোলন কোথায়? যাঁরা জমি দিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে তো আলোচনা চলছেই।’’ এ দিনের নাগরিক সম্মেলনেও আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক কুশল দেবনাথের প্রস্তাব, সরকার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক এবং আন্দোলনকারী ও তাদের সুহৃদদের উপরে ইউএপিএ-সহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুক। আগামী ২০ এপ্রিল তাঁরা বারুইপুরে পুলিশ সুপারের অফিসে বিক্ষোভ দেখাবেন বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ভাঙড়ের জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির তরফে শেখ আজিম, আইনজীবী তথা প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, শিক্ষাবিদ মিরাতুন নাহার, প্রবীণ নাট্যকার চন্দন সেন, আইনজীবী পার্থ সেনগুপ্তরাও সরকার পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবিতেই সরব।
ইতিহাসবিদ পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিঙ্গুরের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা না-বলে ক্ষমতা জাহির করতে গিয়ে তৎকালীন সরকার পক্ষ কী বিপদ ডেকে এনেছিল তা মনে করিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূলের পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বাইরের লোক গ্রামবাসীদের ভুল বোঝাচ্ছে বলে দাবি করে ‘বহিরাগত’দের মঙ্গলজনক কাজে ব্রতী হতে বলেছেন।