প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এমনিতেই প্রকল্প শেষ করার চাপ রয়েছে রাজ্যের উপরে। প্রতীকী ছবি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ‘যোগ্য’ উপভোক্তাদের তালিকায় ফেরাতে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য। তবে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে কোনও বার্তা আসেনি।
রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কথায়, “যোগ্য যে উপভোক্তারা বাদ গিয়েছেন, তাঁরা যাতে অনুমোদন পেতে পারেন, তার জন্য কেন্দ্রকে লিখিত ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।” রাজ্য মনে করছে, কেন্দ্রের কড়া শর্তের কারণে আবাসে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য বহু মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, চিঠিতে রাজ্যের অনুরোধ, মানবিক দিক থেকে তাঁদের বিষয়টি বিবেচনা করুক কেন্দ্র। বর্তমানে কেন্দ্রের শর্ত মেনে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপভোক্তা-তালিকাকে ত্রুটি মুক্ত করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এখনও পর্যন্ত বাদ গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ নাম। এই নাম বাদ যাওয়া নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভও সামাল দিতে হচ্ছে শাসক দলকে।
আবাস প্রকল্পের নাম বদল এবং ত্রুটিপূর্ণ উপভোক্তা তালিকার অভিযোগে বরাদ্দ আটকে দিয়েছিল কেন্দ্র। প্রায় আট মাস পরে সেই বরাদ্দ চালু হলেও, কেন্দ্রের শর্ত মেনে উপভোক্তা-তালিকা ঝাড়াই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করতে হয় রাজ্যকে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, কেন্দ্রের শর্ত অনুযায়ী প্রায় ১৪ রকমের বিধি মানতে হয়েছে। পাশাপাশি, একটি জব-কার্ডে একজন উপভোক্তাকেই বাড়ি দেওয়া যাবে, এমন শর্তে সমস্যা বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, চার জনের পরিবার একটি জব কার্ডে থাকায় তাঁদের এক জনের নামে বাড়ি আগে বরাদ্দ হয়েছিল বা এখন হয়েছে। অথচ সেই পরিবার ভেঙে দু’জন আলাদা হয়ে গেলেও কেন্দ্রের শর্তে ওই দু’জনের কেউ বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন। এমন অনেক উপভোক্তার নামও বাদ পড়ছে কেন্দ্রের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। ফলে চাপ বাড়ছে প্রশাসনের উপর।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এমনিতেই প্রকল্প শেষ করার চাপ রয়েছে রাজ্যের উপরে। তার উপরে জেলায় জেলায় নাম বাদ যাওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অনেকেই। দাবিদাওয়াগুলি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হচ্ছে রাজ্যকে। বিশেষত, সামনেই পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোট। আশঙ্কা, তার আগে এই বিক্ষোভের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে তালিকায় নতুন করে নাম ঢোকানোর বিষয়ে কেন্দ্রের ছাড়পত্র কত দূর মিলবে, তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে সংশয় রয়েছে। কারণ, কেন্দ্র ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে দেশে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে চায় তারা। এখনও পর্যন্ত তৈরি করা গিয়েছে ২ কোটি ১২ লক্ষ বাড়ি। বাকি বাড়িগুলি তৈরির ব্যাপারে সব রাজ্যকেই বলেছে তারা। ফলে এ রাজ্যের ভাগে আর কতগুলির বরাত আসবে, তা নিয়েও চলছে চর্চা।