বহরমপুর ব্লকের ভাকুড়ি ২ পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সদস্য সোমা বিশ্বাসের নাম তালিকাতেই নেই। প্রতীকী ছবি।
এ যেন উলট পুরাণ। একাধিক পঞ্চায়েতের প্রধানের নাম যখন জুড়ে যাচ্ছে আবাস তালিকায়, তখন বহরমপুর ব্লকের ভাকুড়ি ২ পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সদস্য সোমা বিশ্বাসের নাম তালিকাতেই নেই। তাঁর মা পুতুল বিশ্বাসের নাম তালিকায় ছিল, কিন্তু বাদ পড়েছে বলে সোমার অভিযোগ। সোমার দাবি, ‘‘আমার ও মায়ের বাড়ি নেই। বাধ্য হয়ে দিদির বাড়িতে থাকি। কিন্তু তালিকায় আমার নামই নেই আর মায়ের নাম বাদ পড়েছে।’’ বহরমপুরের বিডিও অভিনন্দন ঘোষ বলেন, “ওই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। কিন্তু এখন নতুন করে তালিকায় তাঁর নাম ঢোকানো সম্ভব নয়। পরে যখন আবার কাজ হবে তখন তালিকাভুক্ত করা হবে।” তবে সোমার মায়ের নাম বাদ যাওয়ার কারণ জানা নেই বিডিও-রও। তিনি বলেন, “চূড়ান্ত তালিকা না দেখে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। এমন ঘটনা ঘটলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
সোমার সঙ্গে তাঁর স্বামীর কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি। সোমার অভিযোগ, “দুই নম্বর বৈরগাছি কলোনির যে বাড়ি দেখে আবাস তালিকা থেকে আমার মায়ের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, সেই বাড়ি আমার দিদির।” তিনি বলেন, “ওই বাড়িতে আমি, আমার বছর দশেকের ছেলে ও বাবা-মা থাকি। আমাদের নিজস্ব কোনও বাড়ি নেই। যাঁরা সমীক্ষা করতে এসেছিলেন তাঁরা এ সব কিছুই খোঁজখবর না নিয়ে মায়ের বাড়ি রয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন।” তবে নিজের বাড়ি দরকার বলে তিনি বহরমপুরের বিডিওকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। মায়ের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ার কথা অবশ্য কোথাও জানাননি সোমা। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হওয়ায় অনেক চাপ থাকে। বারবার নিজের কথা বলতে গেলে লোকে সুবিধা নিচ্ছি বলে দোষ দেবে। তাই অন্যের ঘরের প্রয়োজনের কথা বলতে পারি কিন্তু নিজের কথা বলতে পারি না।” সোমা বলেন, “মায়ের জমির ভাগ পাব। সেই জমিতে থাকার জন্য একটি ঘর তৈরি করব বলে ভেবেছিলাম। তালিকায় নাম না থাকায় সেই সুযোগ পাচ্ছি না। মায়ের নামেও ঘর হলে ভাল হত। দিদির কাছে এত দিন ধরে থাকা তো ঠিক নয়।”
বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার অধিকারীও বিষয়টি জানেন। তিনি বলেন, “সোমার ঘর নেই। এই প্রকল্পে বাড়ি পেলে তাঁর সুবিধাই হত। আবাস তালিকায় তাঁর মায়ের নাম আছে বলে শুনেছিলাম। কিন্তু বাদ গিয়েছে বলে শুনিনি।”