আবাসের কাজ দেখতে আসা কেন্দ্রীয় দলকে ঘিরে বিক্ষোভ হল পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। প্রতীকী ছবি।
বাছাই করা কয়েকটি বাড়িতে নয়, যেতে হবে গ্রামের সব পরিবারের কাছে। এমনই দাবিতে বৃহস্পতিবার আবাসের কাজ দেখতে আসা কেন্দ্রীয় দলকে ঘিরে বিক্ষোভ হল পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। গাছের গুঁড়ি ফেলে আটকানো হয় রাস্তা। অবরোধ-বিক্ষোভে ছড়াল উত্তাপ। কেন্দ্রীয় দলকে ঘিরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামনে এসেছে পূর্ব বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদেও।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এখন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অভিযোগের সারবত্তা খতিয়ে দেখতে এসেছে কেন্দ্রীয় দল। কোথাও দ্বিতীয় দফার পরিদর্শন হচ্ছে, কোথাও এই প্রথম। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রথম আসা দুই সদস্যের দলটি এ দিন গিয়েছিল কেশপুরের ধলহারা পঞ্চায়েতে। তালিকা ধরে অভিযোগ যাচাইয়ের সময়েই গ্রামবাসীর একাংশ দাবি তোলেন, ১০-১২টি বাড়িতে গেলে হবে না। এক ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর প্রশ্ন, ‘‘একতরফা কিঁউ হো রহা হ্যায়?’’ কেন্দ্রীয় দলের এক সদস্য জবাব দেন, ‘‘ইয়ে পুরে গাঁওকা দিককত হ্যায়। আপকা আকেলা তো নেহি হ্যায়। আয়েগা তো সবকা আয়েগা।’’
এর পরে গ্রামের ২২০টি বাড়িতেই পরিদর্শনের দাবি তুলে কেন্দ্রীয় দলকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়। বেহাল রাস্তা মেরামতের দাবিও ওঠে। বেশ কিছুক্ষণ রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। শেষে রাস্তা মেরামত, নতুন করে আবাস সমীক্ষার আশ্বাস দেন কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ। পরে গাছের গুঁড়ি সরানো হয়। বিক্ষোভের পুরোভাগে থাকা সালেম আলি মানছেন, ‘‘আমরা তৃণমূলেরই লোক।’’
বিজেপির সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘চুরি ধরা পড়ার ভয়ে কেন্দ্রীয় দলকে তৃণমূল আটকাচ্ছে।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের জবাব, ‘‘২০১৮ সালে নাম উঠেছে। তারপর কেউ যদি একটা স্মার্টফোন কিনে ফেলেন, তাঁর নাম বাদ যাবে। মানুষের ক্ষোভ তো হবেই।’’
এ দিন ক্ষোভের মুখে পড়েন মুর্শিদাবাদ সফরকারী ‘সেন্ট্রাল লেভেল মনিটর’ দলের সদস্যরাও। পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শনের সময়ও কেন্দ্রীয় দলকে নালিশ শুনতে হয়েছে। এক উপভোক্তার দোতলা বাড়ির ছবি তোলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। দলের এক সদস্য প্রদ্যুম্নকুমার কর বলেন, ‘‘যা যা দেখার নির্দেশ রয়েছে, দেখা হল। পরে আরও যাচাই করা হবে।’’
মালদহ ও পূর্ব মেদিনীপুরে এই নিয়ে দ্বিতীয় দফার আবাস-পরিদর্শন হচ্ছে। এ দিন মালদহের কালিয়াচক সীমান্তবর্তী চরি অনন্তপুরের গোয়ালপাড়া গ্রামে তদন্তে যায় কেন্দ্রীয় দল। দলের সদস্য আশিস শ্রীবাস্তব বলেন, “কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে যেমন অভিযোগ আসছে, সেখানে গিয়েই খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।” পূর্ব মেদিনীপুরের দলটি এ দিন গিয়েছিল নন্দকুমার ব্লকের কুমোরচক পঞ্চায়েতে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে অধিকাংশ অভিযোগই সত্যি দেখেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। পরে রাজারামপুর গ্রামেও পরিদর্শনে যান তাঁরা। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে ‘আবাস প্লাস’ তালিকায় নাম উঠল, জবাবদিহি চান বিডিও ও সমীক্ষকদের কাছে। শুধু আবাস যোজনা নয়, ১০০ দিনের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে ১২টি জেলায় যাবে কেন্দ্রের দলটি।