প্রধানমন্ত্রীর আসার পথ মুড়ে দিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি আর দলীয় ফ্লেক্সে। নরেন্দ্র মোদীর মেদিনীপুর সফরের ঠিক এক সপ্তাহ আগে এমনই নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।
একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা সারতে সোমবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন সুব্রতবাবু। সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, “প্রধানমন্ত্রী মেদিনীপুরে আসছেন। জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এমন ভাবে উপস্থাপিত করুন যাতে বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে ওই দল (বিজেপি) উপলব্ধি করে, বাংলায় তাদের চেষ্টা বৃথা।” তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতিরও বার্তা, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাটআউট, ছবিতে প্রত্যেকটা জায়গা সাজাতে হবে। সেই প্রস্তুতি নিন।”
গত মাসে তারাপীঠে অমিত শাহের যাত্রাপথও মমতার ছবি আর দলের ফ্লেক্সে মুড়ে দিয়েছিল তৃণমূল। কাটআউট, ফ্লেক্সের বয়ান লেখা হয়েছিল হিন্দিতে। মেদিনীপুরেও কি তাই হবে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতবাবুর জবাব, ‘‘বাংলা, হিন্দি, ইংরাজি তিন ভাষাতেই লেখা থাকবে। যাতে সবাই সব বুঝতে পারে।’’
মোদীর মেদিনীপুর সফর ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। ধান-সহ ১৪টি খরিফ শস্যের সহায়কমূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদীর মন্ত্রিসভা। সে জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে ১৬ জুলাই মেদিনীপুরে ‘কৃষক কল্যাণ সমাবেশ’-এর আয়োজন করছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, কৃষক স্বার্থের কথা বললেও লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতেই অমিত শাহের পরে এ বার মোদীর সফর।
সেই মতো প্রস্তুতিও নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রস্তুতি বৈঠক সারতে সোমবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মেদিনীপুর জুড়ে মমতার বড় বড় কাটআউট, ফ্লেক্স- ফেস্টুন লাগানো হবে শুনে তাঁর মন্তব্য, “বিজেপি বা মোদীজির নাম শুনলে তৃণমূলের শরীর খারাপ হয়ে যায়। এ আর নতুন কী!” তিনি আরও বলেন, “অমিতজি পুরুলিয়ায় এসেছিলেন। বোকামি করে তৃণমূল ওখানে পাল্টা সভা করতে গিয়েছিল। এক তৃতীয়াংশ লোকও হয়নি। মেদিনীপুরেও হয়তো পাল্টা সভা করবে তৃণমূল। করলেই বুঝবে মানুষ কার সঙ্গে আছেন।”
তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, ১৩ জুলাই মেদিনীপুরে সভা করার কথা ছিল তৃণমূলের। ওই সভা আপাতত স্থগিত থাকছে। তবে ওই দিন মেদিনীপুরে মিছিল করবে শাসক দল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতবাবু বলেন, ‘‘একুশে জুলাইয়ের আগে আমাদের নানা কর্মসূচি হবে। এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সম্পর্ক নেই।’’