জায়গার একটু-আধটু অভাব হলেও অতিথির জন্য কিপ্টেমি নেই এক ফোঁটা! আসন্ন আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার সর্বাঙ্গীণ ছবি তুলে ধরতে গিয়ে তা বুঝিয়ে দিলেন উদ্যোক্তারা।
মিলন মেলা থেকে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলা সরিয়ে নিয়ে যেতে হলেও জায়গার অভাবটা মোটামুটি পুষিয়ে দেওয়া গিয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন গিল্ড-কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। গত বারের ১৩ একরের বদলে এ বার পার্কিংয়ের জমি বাদ দিয়েই হাতে থাকছে সাড়ে ১২ একর। গত বছরের ৬০০টি স্টল থেকে কমে এ বার ৫৮০টি স্টল এবং ২০টি লিটল ম্যাগাজিনের জায়গা থাকবে বলে জানান ত্রিদিববাবু।
নানা টানাপড়েন সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বইমেলার মাঠে সাড়ে চার একর জায়গার ব্যবস্থা হওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। গিল্ড-কর্তাদের ঘোষণা, এ বারেই বইমেলার থিম-দেশের জন্য সব থেকে বড় প্যাভিলিয়ন থাকছে।
ত্রিদিববাবু বলেন, ‘‘থিম দেশের প্যাভিলিয়ন এর আগে কখনওই ৫০০০ বর্গফুটের বেশি হয়নি! এ বার তা হবে ১৪ হাজার বর্গফুট।’’ ভারত-ফ্রান্স সংস্কৃতি উৎসব ‘বোঁজুর ইন্ডিয়া’ উপলক্ষে একটি ভ্রাম্যমাণ ডিজিটাল প্রদর্শনী এখন গোটা দেশ ঘুরছে। সেই প্রদর্শনীটি কলকাতা দেখতে পাবে বইমেলার আসরেই। শহরে ফ্রান্সের কনসাল জেনারেল দামিয়ঁ সিয়েদ বা এ রাজ্যের ফরাসি সংস্কৃতি আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ-এর অধিকর্তা ফাবরিস প্লাসঁ বলছিলেন, ‘বোঁজুর ইন্ডিয়া’ উৎসবের মূল মন্ত্র ভারত-ফ্রান্স সম্পর্কের তিনটি দিক। সেই তিন দিক— উদ্ভাবনা, সৃষ্টিশীলতা ও মেলবন্ধনকেই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়। ‘দ্য এক্সপিরিয়ঁস’ নামের প্রদর্শনীটি তুলে ধরছে ভারত ও ফ্রান্সের সম্পর্কের যাত্রাপথটিকেই।
বইমেলার উদ্বোধনের দিনেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতে লিজিয়ঁ দ’নর সম্মান তুলে দেবেন ফরাসি সংস্কৃতিমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়াজ নিসেন। উদ্বোধনী মঞ্চেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন তিনি। বইমেলার মাঠে সৌমিত্রকে এ বার তাঁর সৃষ্টিশীল জীবনের জন্য সম্মাননার আয়োজন করা হয়েছে। বইমেলার অতিথি, ফরাসি লেখক-তালিকাটিও ভারত-ফ্রান্স সম্পর্কের স্মারক। এক সময়ে যিনি কলকাতায় ফরাসি কনসাল জেনারেল ছিলেন, সেই ফাবরিস এতিয়েন আসছেন লেখকের ভূমিকায়। কৃতী লেখক ফাবরিস ‘কলকাতার ভূতেরা’ বলে একটি উপন্যাসও লিখেছেন। আর এক জন অতিথি, ফরাসি ভাষার লেখক সুমনা সিংহও জন্মেছেন কলকাতায়। এতশত ঘোষণার পরে ফরাসি কনসাল জেনারেলও নরম স্বরের বাংলায় বললেন, ‘‘বইমেলা দেখার অপেক্ষায় আমরা খুবই উৎসাহিত।’’