নির্মল কুমার সিংহ। নিজস্ব চিত্র
মুখে মাস্ক নেই কেন, প্রশ্ন করে আক্রান্ত হলেন এক বৃদ্ধ। ইটের ঘায়ে কপাল ফাটিয়ে রক্তাক্ত করা হল তাঁকে। শনিবার রাজ্য জুড়ে সার্বিক লকডাউনের দিন ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সদর শহর সিউড়ির স্টেশনবাজার মোড়ে। বৃদ্ধ নির্দিষ্ট করে নাম বলতে না পারলেও তৎপরতা দেখিয়ে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে পুলিশ গ্রেফতার করে।
বছর ৭৩-এর ওই বৃদ্ধের নাম নির্মল কুমার সিংহ। সেন্ট্রাল কোলফিল্ড লিমিটেড ধানবাদের ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর বাড়ি সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের কাছে রামকৃষ্ণপল্লিতে। প্রতিদিনের মতো শনিবারও প্রাতঃভ্রমণে বের হয়েছিলেন। ওই বৃদ্ধ বলেন, ‘‘ভোরে উঠে হেঁটে ফেরার সময় দুধ নিয়ে ফেরা আমার রুটিন। এ দিন ফেরার সময় দেখি মোড়ে বেশ কিছু লোক মুখে মাস্ক ছাড়াই রয়েছে। আমি বলি, ‘কেন মাস্ক পরোনি’। বাকিরা কথা শুনলেও দু’জন মানতে চায়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, এই কথাকাটাকাটির মধ্যে এক প্রৌঢ় রাস্তা থেকে ইট কুড়িয়ে তাঁর কপালে আঘাত করেন। নির্মলবাবু রাস্তায় পড়ে যান। আহত বৃদ্ধকে সিউড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পরে তিনি থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান। ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে ফকিরপাড়ার বাসিন্দা, অভিযুক্ত প্রৌঢ়কে তুলে নিয়ে যায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি রুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে।’’
তবে অভিযুক্তের পুত্রবধূর দাবি, ‘‘আমার সন্তান মারা গিয়েছে লকডাউনের ঠিক আগে। তার পর থেকেই শ্বশুরের মনমেজাজ ভাল নেই। সেই জন্যই হয়তো এমনটা করে ফেলেছেন তিনি। অন্যায়ের জন্য নির্মলবাবুর কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’’ নির্মলবাবু বলছেন, ‘‘কেউ আমার কাছে আসেনি। পুলিশে অভিযোগ হয়েছে। যা করার পুলিশ করবে।’’ তবে আক্রান্ত হলেও আগামী দিনে প্রতিবাদের পথ থেকে সরতে নারাজ নির্মলবাবু। বলেন, ‘‘আমি প্রতিবাদ করেছি সমাজের স্বার্থে। সংক্রমণ রুখতে এর পরেও যদি কাউকে মাস্ক ছাড়া দেখি, একই ভাবে প্রতিবাদ করব। আঘাত পেলেও!’’