চলছে বাঁধ মেরামতির কাজ। সাগরের বঙ্কিমনগর এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
ঝড়ের পূর্বাভাসে তড়িঘড়ি বিভিন্ন এলাকায় বেহাল বাঁধ সংস্কার শুরু হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে। কেন সময় থাকতে বেহাল বাঁধের সংস্কার করা হয় না, সেই প্রশ্ন তুলছেন এলাকার মানুষ। বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের বঙ্কিমনগর বাঁধ মেরামতির কাজের মান নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দা অজয় দাস বলেন, “ঝড়ের দু’দিন আগে থেকে বাঁধ মেরামতি চলছে। পুকুর থেকে পাঁক মাটি নিয়ে নদী বাঁধে প্রলেপ দিয়ে চট চাপানো হছে। সমুদ্র উত্তাল হলে এই বাঁধ টিকবে না।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, সাগরের একাধিক এলাকা, ঘোড়ামারা, মৌসুনি দ্বীপ, পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর, গোসাবা, কুলতলির বিভিন্ন এলাকায় বাঁধের অবস্থা খারাপ। প্রশাসন জানায়, দুর্বল নদীবাঁধগুলির দিকে নজর আছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে সেচ দফতরকে। রাতে বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ পরিদর্শন করেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। কুলতলি যান স্থানীয় বিধায়ক গণেশ মণ্ডল। বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে এলাকার সব দুর্বল বাঁধ মেরামতের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে এ দিন সতর্কতা প্রচার হয়। নদী তীরবর্তী এলাকাগুলি থেকে মানুষকে নিরাপদে সরে আসতে বলা হয়। নানা এলাকায় ফ্লাড শেল্টার, স্কুল বাড়ি তৈরি আছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন জানায়, রাত পর্যন্ত ৪৫,৬৫৩ জনকে সরিয়ে আনা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরে শুকনো খাবার, জলের ব্যবস্থা হয়েছে। সাগর, পাথরপ্রতিমার জিপ্লট ও গোসাবার রাঙ্গাবেলিয়ায় তিনটি এনডিআরএফ টিম পৌঁছেছে। কুলতলি ও নামখানায় দু’টি এসডিআরএফ টিম। সিভিল ডিফেন্স ওয়াটার উইংয়ের নৌকা, জেলা প্রশাসনের নৌকা, প্রশিক্ষিত ডুবুরি তৈরি। ফেরি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ ও গঙ্গাসাগরে বুধবার থেকে সমুদ্রে নামায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। বকখালি সৈকতে পর্যটকদের ভিড় ছিল। এলাকায় হোটেল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এ দিন সাগরের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ৬৫ জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে আনা হয়েছে সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে। জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “উপকূল এলাকার ব্লকগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।” বঙ্কিম হাজরা বলেন, “দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার উপকূল এলাকার বিডিও ও পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রশাসন সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত।”