ঘটনাস্থলে পড়ে রক্ত। দেখতে ভিড় জমিয়েছেন অনেকেই।ছবি: রামপ্রসাদ সাউ
সিনেমার ধাঁচে পেশাদার কিলারের স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে পরপর গুলি…। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিজের চেনা গণ্ডিতেই লুটিয়ে পড়ল শ্রীনু নায়ডু। তারপর তার মৃত্যু। বুধবার বিকেলে এই খবর শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান শহরের অধিকাংশ লোকই। রাতে ঘটনাস্থল ছিল থমথমে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই খড়্গপুরের নিউ সেটলমেন্টে তৃণমূলের ওয়ার্ড কমিটির কার্যালয়ের সামনে ভিড় জমান অনেকে। তখনও চাপ বেধে থাকা রক্ত, জুতো পড়ে থাকতে দেখে শিউড়ে ওঠেন তাঁরা। আতঙ্কের শহরে ফের উঠল চেনা প্রশ্ন, আমরা নিরাপদ তো।
বৃহস্পতিবার শহরের মোড়ে মোড়ে ছিল একটাই আলোচনা, এই কাণ্ড কে ঘটাল। কেউ বা শঙ্কিত আবার কেউ বা ভাবলেশহীন। শহরের সাঁজোয়ালের বাসিন্দা রেলকর্মী কৃশানু আচার্য বলেন, “শহরে শ্রীনুর নেতিবাচক ভাবমূর্তি ছিল। তাই শ্রীনুর মৃত্যুতে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে কোনও প্রভাব পড়েনি। তবে ভরদুপুরে শহরের বুকে এমন ঘটনায় আমরা শঙ্কিত।”
আবার শহরের নোয়াখোলির বাসিন্দা আর সুমন, ডি মহেশদের আক্ষেপ, “দাদার মতো মনের মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। ও তো নিজেকে অনেক বদলে নিয়েছিল। খড়্গপুরের কেউ না জানুক শ্রীনু নায়ডুর ঋণ নয়াখোলি ভুলবে না।” নয়াখোলির বাসিন্দাদের তাই একটাই দাবি, খুনের উপযুক্ত বিচার চাই। যদিও মালঞ্চ, খরিদা, ইন্দা, কৌশল্যা, তালবাগিচা, ঝাপেটাপুর এলাকায় এ দিন দোকানপাট খোলা ছিল। প্রতিদিনের মতো সকলে কাজে বেরোন।
সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই বেদনাদায়ক। একজন মাফিয়ার মৃত্যুতে শহরবাসী আপাতত স্বস্তি পেয়েছে। তবে এই স্বস্তি কতদিন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।” একইভাবে, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। শ্রীনু নায়ডুর অতীত কার্যকলাপ সম্পর্কে শহরের মানুষ ওয়াকিবহল। পুরসভা নির্বাচনে কী ভাবে শ্রীনু নায়ডু কাজ করেছে তা মানুষ জানে। তাই তার মৃত্যুতে শহরের মানুষ চিন্তিত নয়।”
তবে শঙ্কাটা থেকেই গেল। মালঞ্চর এক বাসিন্দার কথায়, “শ্রীনুর সঙ্গে রামবাবু-সহ অনেকের শত্রুতা ছিল। এই ঘটনার পরে শ্রীনুর অনুগামীরা চুপ করে বসে থাকবে না। তখন শহর অশান্ত হবে। এতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হতেই পারে।”