চোখের জলে বিদায় জওয়ানকে

দিনটা ছিল তাঁর জন্মদিন। বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে উড়িয়ে আনা হয় তাঁর দেহ। সেখান থেকে রওনা করানো হয় নাজিরপুরের দিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাদাতা

করিমপুর ও রেজিনগর শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৭
Share:

কাশ্মীর থেকে কফিনবন্দি দেহ এল বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

একটা ভোর এল অন্য রকম। রাতভর ঘুমোতে পারেনি তেহট্টের নাজিরপুরের বাড়িটা। শুক্রবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ বিএসএফ জওয়ানেরা বাড়িতে বয়ে নিয়ে এলেন পাক সীমান্তে নিহত রাধাপদ হাজরার কফিনবন্দি দেহ। বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্বা সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্তে প্রহরার সময়ে পাক রেঞ্জার্সদের স্নাইপারের গুলিতে নিহত হন বিএসএফের ১৭৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল, ৫১ বছরের রাধাপদ। দিনটা ছিল তাঁর জন্মদিন। বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে উড়িয়ে আনা হয় তাঁর দেহ। সেখান থেকে রওনা করানো হয় নাজিরপুরের দিকে।

Advertisement

চোখের জলে ভেসে কফিনে মালা দেন নিহতের স্ত্রী সুজাতা, মেয়ে রাজেশ্বরী, ছেলে রাহুল এবং অন্য পরিজনেরা। কলকাতা থেকেই সঙ্গে এসেছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারাও শেষ শ্রদ্ধা জানান। সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ কফিন নিয়ে জওয়ানেরা রওনা দেন রাধাপদ হাজরার জন্মভিটে, রেজিনগরের হাটপাড়ার দিকে। স্ত্রী-সন্তানেরাও যান সঙ্গে। সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ ধাওড়াপাড়া এলাকায় বিএসএফের গাড়ি থেকে দেহ নামানো হয়। তার পর কফিন কাঁধে জওয়ানেরা যান রামপাড়া এলাকার হাটপাড়ার বাড়িতে। কফিন দেখে ডুকরে কেঁদে ওঠেন রাধাপদর বৃদ্ধা মা অম্বিকা হাজরা। কফিন ঘিরে তখন হাজার দেড়েক মানুষের জমায়েত। পরে শুনিয়াপাড়া ও নলাহাটি গ্রাম পেরিয়ে শক্তিপুর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় কফিন। সেখানেই গান স্যালুট দেওয়া হয়। কফিনে মালা দেন পুলিশ ও বিএসএফ কর্তারা। দুপুর ২টো নাগাদ শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

রাধাপদর বাল্যবন্ধু তথা পড়শি, কাশীপুর পূর্বাচল প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক কেশব মণ্ডল কাঁদতে-কাঁদতে বলেন, ‘‘ও আর আমি এক স্কুলে পড়েছি। খেলাধুলোয় খুব ভাল ছিল ও। শক্তিপুর কেএমসি ইনস্টিটিউশনে উচ্চ মাধ্যমিক আর বেলডাঙা কলেজে বি কম আমরা এক সঙ্গেই পড়ি। অসময়ে চলে গেল।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement