ফাইল চিত্র।
অমিত শাহ তখন বক্তব্য রাখছেন। মঞ্চ ঠাসা নেতা-নেত্রীতে। মঞ্চের সামনে দু’টি ছাউনিও ভর্তি। ছাউনি পার করলেই মাঠের সবুজ সহজেই নজরে পড়ছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বিজেপি-কর্মী সমর্থকেরা। তা দেখে তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ কটাক্ষ করেছেন, “এত বিপুল খরচ করেও বিজেপি শাহের সভায় মাঠ ভরাতে পারেনি।” বিজেপি নেতারা পাল্টা দাবি করেছেন, অন্তত ত্রিশ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, কুড়ি হাজারের বেশি জনসমাগম হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভা বলে কথা। ভিড় জোটাতে তাই চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি বিজেপির জেলা নেতারা। উত্তরবঙ্গের সব জেলা থেকে সমর্থকদের আনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পিক আপ ভ্যান থেকে ট্রেন— সবেতেই কর্মী-সমর্থকদের আনার ব্যবস্থা ছিল। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের কাছাকাছি সভাস্থল। তাই ট্রেন ভাড়া করার প্রবণতা দেখা গিয়েছে সব জেলা থেকেই। সে জন্যই সভা শুরুর আগে এবং পরেও এনজেপি স্টেশন থেকে লাইন দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের সভাস্থলে ঢুকতে দেখা গিয়েছে।
এ দিন বক্তব্যের গোড়াতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মুখে ‘কোচবিহার’ জেলার কথা শোনা গিয়েছে। এর কারণ রয়েছে বলে দলেই একাংশের বক্তব্য। তৃণমূলের কটাক্ষ, শাহের সভায় তো কোচবিহার থেকে ফাঁকা ট্রেন গিয়েছে। কর্মীরা শুয়ে-বসে হাওয়া খেতে খেতে বিজেপি কর্মীরা পৌঁছেছেন। বিজেপির কোচবিহার জেলার সভাপতি সুকুমার রায় অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের ট্রেনে ভিড় হয়ে যাওয়ায় অন্য ট্রেনেও গিয়েছেন অনেকে।”
জলপাইগুড়ি জেলায় অন্তত দু’শোটি বাস এবং তার থেকেও বেশি সংখ্যায় ছোট গাড়ি ভাড়া করে পাঠিয়েছে বিজেপি। সব মিলিয়ে অন্তত ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে অমিত শাহের সভায় ভিড় করার মূল্য নিয়ে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট স্টেশন থেকে বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ির ট্রেন ছাড়ে। মালদহ থেকে ট্রেন এবং বাস, দু’ভাবেই কর্মী-সমর্থকদের শিলিগুড়ি নিয়ে গিয়েছে বিজেপি। যদিও দলের অন্দরেই দাবি, জেলা থেকে খুব বেশি লোক যায়নি সভায়। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর, করণদিঘি, চোপড়া থেকেও বিজেপি সমর্থকরা সভায় এসেছিল।
ভিড়ে ব্যতিক্রম কিন্তু আলিপুরদুয়ার। সম্প্রতি এই জেলায় বিজেপির প্রভাব কমেছে কিনা, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু এ দিন দেখা গেল, আলিপুরদুয়ার থেকে যে সব ট্রেন শিলিগুড়ি গিয়েছে, তাতে উপচে পড়েছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। ভিড়ের চাপে ট্রেনে উঠতে না পেরে মাদারিহাট ও দলগাঁও স্টেশন থেকে বাড়ি ফিরতে হয় অনেক কর্মী-সমর্থককে।