পোশাক বিলির প্রথম দিনে। নিজস্ব চিত্র
এই দোকান থেকে মিলবে জামা, কাপড়, জুতো। মজুত থাকলে মিলবে হাঁড়ি, কড়াই, থালা, গ্লাসও। কিন্তু এ সবের বিনিময়ে লাগবে না কানাকড়িও। এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ভগবানের দোকান’। শনিবার থেকে আসানসোলের পলাশডিহায় চালু হল এই দোকান। প্রথম দিনেই শিশুদের পোশাক বিতরণ করেন অভিনেতা দেবলীনা দত্ত ও তথাগত মুখোপাধ্যায়। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মন্ত্রী মলয় ঘটক।
আসানসোলের একটি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে পথ চলা শুরু হয়েছে এই দোকানের। মূল উদ্যোগ, শহরের দুই শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডু ও অভিজিৎ দেবনাথের। সঙ্গে রয়েছেন এক দল কলেজ পড়ুয়া ও কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি। সম্প্রতি তাঁদের এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন ওই দুই অভিনেতাও।
কিন্তু উদ্যোগটি কেমন? জানা গেল, অনেক বাড়িতেই গৃহস্থালীর নানা জিনিসপত্র থাকে, যেগুলি ভাল অবস্থাতেও বাতিল করে দেওয়া হয়। চন্দ্রশেখরবাবুদের আর্জি, ওই সব জিনিসপত্রগুলি নষ্ট না করে দেওয়া হোক দোকানে। সেগুলি পৌঁছে দেওয়া হবে সেই সব মানুষদের কাছে, যাঁদের সে সবের দরকার রয়েছে। অভিনেত্রী দেবলীনা জানালেন, তাঁরা এই উদ্যোগটির নাম রেখেছেন ভগবানের দোকান। মাস ছয়েক আগে এমন দোকান খোলা হয়েছে সুন্দরবনের বালি দ্বীপে। আসানসোলের পলাশডিহায় লাগোয়া প্রায় ২০টি গ্রামের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়, এমন সব পরিবারের জন্য এই উদ্যোগ।
আরও পড়ুন: অঙ্গদান নিয়ে প্রস্তাব দেবে কে, সংশয়
শনিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, একটি ঘরে ডাঁই করে রাখা পুরনো, কিন্তু ভাল জামাকাপড়। অন্য ঘরে, হাঁড়ি, কড়াই, বালতি, চেয়ার-সহ গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় নানা জিনিস। এই উদ্যোগের কথা জানতে পেরে প্রথম দিনেই ভিড়় জমিয়েছিলেন অনেকেই। জিনিসপত্র নিয়ে এসেছিলেন কেউ কেউ। স্থানীয় বাসিন্দা মিহির সরকার বলেন, ‘‘উদ্যোগের কথা শুনে কিছু জিনিসপত্র এনেছি। খুবই ভাল লাগছে।’’ কেউ কেউ ভি়ড় করেছেন জিনিসপত্র নিয়ে যেতে। দেবলীনাকে দেখা গেল, কয়েক জন শিশুর গায়ের মাপ নিচ্ছেন।
উদ্যোগের কথা জেনে মন্ত্রী মলয়বাবু এই কাজে প্রত্যেককেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ শ্যাম সোরেন বলেন, ‘‘এলাকার গরীব মানুষেরা এই দোকানের ফলে উপকৃত হবেন। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমিও রয়েছি।’’ জানা গিয়েছে, এলাকারই এক ব্যক্তি সপ্তাহে তিন দিন নিয়ম করে দোকান খুলবেন। প্রয়োজন বুঝে তিনিই জিনিসপত্র তুলে দেবেন প্রত্যেকের হাতে। দোকানের নামটি রেখেছেন চন্দ্রশেখরবাবুরাই। তাঁর কথায়, ‘‘ঈশ্বরের ঊর্ধ্বে তো কেউ নন। তাই তাঁরই নামে আমাদের পথচলা।’’