জেসপ কাণ্ডের তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি করল সিআইডি। তাদের দাবি, রুইয়া গ্রুপ অব কোম্পানিজ-এর অধীনে থাকা জেসপ কারখানার পুনরুজ্জীবনের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সিআইডি-র এক কর্তা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সেই টাকা দিয়ে বিদেশে বাড়ি-জমি-সহ নানা সম্পত্তি কেনা হয়েছে বলে আমাদের হাতে তথ্য এসেছে।’’
বিদেশের কোথায় ওই সব সম্পত্তি কেনা হয়েছে, তারও তালিকা তাঁদের হাতে এসেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। অভিযোগ, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও তাইল্যান্ডে প্রায় কয়েকশো কোটি টাকায় ওই সব সম্পত্তি কেনা হয়েছে।
বাম আমলে জেসপ ও ডানলপ, দু’টি সংস্থাকেই রুগ্ণ ঘোষণা করা হয়। বাম আমলেই ২০০৭ সালে ডানলপ ও জেসপের পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। সিআইডি-র এক কর্তার কথায়, ‘‘পুনরুজ্জীবনের জন্য নানা ভাবে সরকারি সাহায্য পেয়েছিল রুইয়া গ্রপ অব কোম্পানিজ। ওই সময়ে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে পবন রুইয়ার ওই দুই সংস্থার নামে ঋণ নেওয়া হয়েছিল। বাজার থেকে কম সুদে ঋণ নেওয়া ওই টাকা জেসপ ও ডানলপের পুনরুজ্জীবনের জন্য বিনিয়োগ না করে, তার সিংহভাগ হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়েছে।’’ রুইয়া পরিবারের কয়েক জন সদস্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও ঋণের বেশ কিছু টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
সিআইডি সূত্রের খবর, বছর তিনেক আগে তাইল্যান্ডের একটি দ্বীপে পবন রুইয়ার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে যোগ দিতে অতিথিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিশেষ বিমানে করে। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ঋণের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া টাকা থেকেই এই সব খরচ করেছিলেন পবন। অফিসারেরা জানতে পেরেছেন, মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রায় কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করেছিলেন পবন। সেই খরচের বিস্তারিত হিসেব মিলেছে বলেও তাঁদের দাবি। সিআইডি সূত্রের খবর, গত দু’দিন ধরে পবনকে জেরার সময়ে এই সব তথ্য তাঁর সামনে তুলে
ধরা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রুইয়া গ্রুপ অব কোম্পানিজ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংস্থার মুখপাত্র এ দিন বলেন, ‘‘প্রথমত রেলের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ হলে তো রেলের মামলা করার কথা। এফআইআর কেন করল? দুই, সিআইডি রেলের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করছে বলে শুনেছি। এখন তো দেখছি তদন্তের গতিপ্রকৃতি পাল্টে পাল্টে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, যেন তেন প্রকারে পবন রুইয়াকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা চলছে।’’