পথশ্রী এবং রাস্তাশ্রী প্রকল্পের অধীন সমস্ত রাস্তার কাজ মে মাসের মধ্যে শেষ করার টার্গেট বেঁধে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফাইল চিত্র।
যে কোনও সময় ঘোষণা হতে পারে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। একই সঙ্গে চলে আসবে বর্ষার মরসুম। তাই আর দেরি না করে পথশ্রী এবং রাস্তাশ্রী প্রকল্পের অধীনে শুরু হওয়া রাস্তার কাজ মে মাসের মধ্যেই শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ২৬ এপ্রিল নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে এই কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে বর্ষায় কাজ হলে রাস্তার গুণমান ভাল হয় না বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রতিটি জেলার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন পঞ্চায়েত দফতরের উচ্চপদস্থ কর্তারা। সেই বৈঠকের পরে পথশ্রী এবং রাস্তাশ্রী প্রকল্পের অধীন সমস্ত রাস্তার কাজ মে মাসের মধ্যে শেষ করার টার্গেট বেঁধে দিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের এমন তড়িঘড়ি নির্দেশের পিছনে রাজনীতি দেখছে বিরোধী দলগুলি। তাঁদের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করতে মে মাসের মধ্যে গ্রামের রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ করে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। কারণ, গত পাঁচ বছরে গ্রামীণ-রাস্তা নির্মাণের কাজ সে ভাবে হয়নি, সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতেই তড়িঘড়ি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে বলা হচ্ছে।
তবে পঞ্চায়েত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, রাজ্য প্রশাসনের এমন নির্দেশের সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের কোনও যোগ নেই। গ্রীষ্মের মরসুম শেষ হলেই আসবে বর্ষা। সেই বর্ষার মরসুমে যাতে গ্রামীণ রাস্তার অবস্থা বেহাল না হয় সেই কারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পথশ্রী এবং রাস্তাশ্রী প্রকল্পে তিন হাজার কোটি টাকা খরচে ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরি করবে রাজ্য। এই প্রকল্পে ২২টি জেলায় মোট ৮,৭৬৭টি রাস্তা নির্মাণ বা মেরামত করা হবে। যার মধ্যে ৭,২১৯টি নতুন এবং ১,৫৪৮টি রাস্তা মেরামত করা হবে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করছে রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বাজেট অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মূলত গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যই এই বিপুল বরাদ্দ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্ষার মরসুমে যাতে এই বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের অপচয় না হয় সে বিষয়েও সচেতন থাকতে বলা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে।