(বাঁ দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অয়ন শীল (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অয়ন শীলকে আবারও জেল হেফাজতে পাঠাল বিশেষ সিবিআই আদালত। শুক্রবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়েছিল দু’জনকে। সেখানেই বিচারক এই নির্দেশ দিয়েছেন। জেলে গিয়ে সিবিআই পার্থকে জেরার আবেদন জানিয়েছে কোর্টে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ অক্টোবর। ওই দিন পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকবেন পার্থ এবং অয়ন। পার্থ এখন প্রেসিডেন্সি জেলের হাসপাতালে রয়েছেন। অয়নও জেলবন্দি।
গত ১ অক্টোবর বিশেষ সিবিআই আদালতে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থকে হাজির করানো হয়। তার পর তাঁকে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারের আবেদন জানায় সিবিআই। সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। তার পরেই পার্থকে গ্রেফতার করে সিবিআই। পার্থের পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অয়নকেও আদালতে হাজির করানোর পর গ্রেফতার করে সিবিআই। যদিও ওই দিন দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আলাদা করে আবেদন জানায়নি সিবিআই।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ২৩ জুলাই পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার আগের দিন, ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থের বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও হানা দেয় ইডি। টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। একই সঙ্গে উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। নিয়োগ দুর্নীতিতে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ২৩ তারিখ পার্থের সঙ্গে অর্পিতাকে গ্রেফতার করেছিল ইডি।
অন্য দিকে, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন তৃণমূল যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ প্রোমোটার অয়নকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এ বার তাঁকেও প্রাথমিকে নিয়োগ মামলাতে গ্রেফতার করল সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, অয়ন আট এজেন্টের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ১ কোটি ৬৭ লক্ষ কোটি টাকা তুলেছিলেন। সেই টাকা সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিল। অয়ন ইমেল করে প্রার্থী তালিকা সন্তুকে পাঠিয়েছিলেন। সন্তু সেই তালিকা কুন্তলকে দেন।
জামিন চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন পার্থ। বৃহস্পতিবার সেই জামিনের মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পুজোর আগে এই মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির মামলায় পার্থের জামিনের আর্জিটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। শীর্ষ আদালতে সেটিরও পরবর্তী শুনানি রয়েছে ১৭ অক্টোবর। অর্থাৎ, পুজোর পরে। এই নিয়ে টানা তিনটি দুর্গাপুজো জেলেই থাকছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। আগামী সোমবার হাই কোর্টে ফের উঠবে পার্থের জামিন মামলা।