অকল্পনীয় সন্ত্রাসের গ্রাসে সল্টলেক। গুন্ডা বাহিনী সঙ্গে নিয়ে পিস্তল উঁচিয়ে সিপিএম প্রার্থী রমলা চক্রবর্তীর বাড়ি ঘিরে ফেলার অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের বিরুদ্ধে। বিধাননগরের তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসু দিনভর শ’য়ে শ’য়ে বহিরাগত নিয়ে দাপিয়ে বেড়ালেন একের পর এক ওয়ার্ডে। আর এক বিধায়ক অর্জুন সিংহের নেতৃত্বে এফডি ব্লক এবং সংলগ্ন এলাকায় চলল ভীতি প্রদর্শন, সন্ত্রাস কায়েমের চেষ্টা।
শনিবার শাসকের তাণ্ডব সল্টলেকে নির্লজ্জ রূপ নিল। বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল আক্ষরিক অর্থেই দুষ্কৃতীদের নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরছেন বলে সবক’টি বিরোধী দল অভিযোগ করছিল। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। দুপুর নাগাদ সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতেই হামলা চালালেন পরেশ। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের হেভিওয়েট সিপিএম প্রার্থী রমলা চক্রবর্তীকে নিয়ে গোড়া থেকেই টেনশনে ছিল তৃণমূল। তাই সকাল থেকেই ওই ওয়ার্ডের বুথে বুথে হামলা শুরু হয়ে যায়। মার খেয়েও বাম কর্মীরা প্রতিরোধের চেষ্টা করছিলেন। দুপুরের দিকে সেই জন্যই বোধ হয় পরেশ পালের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। অভিযোগ, তিনি শ’দুয়েক লোক নিয়ে রমলা চক্রবর্তীর বাড়ি ঘিরে ফেলেন। নিজেই পিস্তল উঁচিয়ে নির্দেশ দেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় সাংবাদিকদের। রমলাদেবীর বাড়িতে ব্যাপক ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। দীর্ঘক্ষণ সেখানে গোলমাল চলে। তবে সংবাদমাধ্যম বন্দুকের মুখে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হওয়ায় এর পরের ঘটনা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
বোমা-গুলি-তাণ্ডব, অবাধে ভোট লুঠ শাসকের
একই ভাবে গোটা বিধাননগরে ভোট করিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক সুজিত বসু। ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহও সুজিতবাবুর সঙ্গে ছিলেন। এফডি ব্লক কমিউনিটি সেন্টার, এফই ব্লক, এফসি ব্লক এবং করুণাময়ীকে ঘিরে বেশ কয়েকটি এলাকায় বহিরাগত বাহিনীর সমাবেশ ঘটিয়েছিল তৃণমূল। সুজিত বসুর নির্দেশেই এ দিন সাংবাদিকদের উপর একের পর এক আক্রমণ হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এক সাংবাদিককে মারার নির্দেশ দিয়েছেন। অসীম দাশগুপ্ত এবং রমলা চক্রবর্তীর ওয়ার্ডে ভোট যাতে তৃণমূলের পক্ষে ‘অবাধ’ হয়, তা সুনিশ্চিত করতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি সুজিত ও অর্জুন। দুই বিধায়কই বিধাননগরের বাইরে থেকে বিপুল সংখ্যায় দুষ্কৃতীর জমায়েত ঘটান বলে অভিযোগ। অর্জুন সিংহ নিজের কেন্দ্র ভাটপাড়া থেকে তাঁর বিখ্যাত বাহিনীকে নিয়ে সল্টলেকে হাজির হন। সুজিত-অর্জুনের যৌথ বাহিনীতে এক হাজারেরও বেশি লোকজন ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন। গোটা সল্টলেকে দাপিয়ে দিনভর প্রবল সন্ত্রাসে বিরোধীদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে এই বাহিনী।
কৈখালিতে গুলি, সংঘর্ষ, প্রতিরোধে পুড়ল বাইক