প্রতীকী ছবি।
আবহমান কাল ধরে খতিয়ান রাখা হচ্ছিল স্কুলের রেজিস্টার বা হাজিরা খাতায়। কিন্তু কত ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসছে, স্কুলছুটের সংখ্যা কত, কোন কোন ছেলে বা মেয়ে স্কুলে পা রাখেনি, তার হিসাব এখন অনলাইনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন কাজ, তার উপযুক্ত সরঞ্জাম তো চাই। তাই ওই হিসাব রাখার জন্য স্মার্টফোনের দাবি জানাচ্ছেন পার্শ্ব শিক্ষকেরা। এই দাবিতে ইতিমধ্যেই অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে স্মারকলিপি দিয়েছে পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ। তারা জানিয়েছে, স্মার্টফোন না-পেলে বেশির ভাগ পার্শ্ব শিক্ষক এই কাজ করতে চাইছেন না।
প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে পঠনপাঠনের কাজের সঙ্গে সঙ্গে কত পড়ুয়া স্কুলে আসছে, তার হিসাবও রাখতে হয় পার্শ্ব শিক্ষকদের। শুধু স্কুলের পড়ুয়াদের হিসাব রাখাই নয়, কোনও পড়ুয়া যদি অনেক দিন ধরে স্কুলে না-আসে, তা হলে কেন সে আসছে না, তা দেখতে সেই পড়ুয়ার বাড়িও যেতে হয় তাঁদের। খুঁজে দেখতে হয়, কোন পড়ুয়া আদৌ স্কুলে যায়নি। তাকে স্কুলমুখী করতে উদ্যোগী হতে হয় পার্শ্ব শিক্ষকদেরই।
পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের এই হিসাব আগে স্কুলের রেজিস্টারে রাখতে হত। কিন্তু এখন অনলাইনে হিসাব রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু অনেক পার্শ্ব শিক্ষকেরই স্মার্ট ফোন নেই। তাই আমরা চাই, সব পার্শ্ব শিক্ষকের জন্য স্মার্টফোনের ব্যবস্থা করুক শিক্ষা দফতর।’’
ভগীরথ জানান, তাঁদের বেতন মাত্র ন’হাজার টাকা। এই সামান্য বেতনে বহু পার্শ্ব শিক্ষকের পক্ষেই স্মার্টফোন কেনা সম্ভব নয়। ‘‘প্রতি বছর দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় দশ লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব দেয় শিক্ষা দফতর। তা হলে ৪১ হাজার পার্শ্ব শিক্ষককে কেন স্মার্টফোন দেবে না? আমরা তো কাজের জন্যই চাইছি,’’ বলেন ভগীরথ।
পার্শ্ব শিক্ষকদের অভিযোগ, পড়ুয়ার হিসাব রাখার জন্য অনেক সময়েই আলাদা কোনও পারিশ্রমিক পেতেন না তাঁরা। কোনও কোনও জেলায় এই কাজের জন্য সামান্য পারিশ্রমিক দেওয়া হত। চলতি বছর থেকে পড়ুয়ার হিসাব রাখার জন্য পড়ুয়া-প্রতি এক টাকা ধার্য করেছে শিক্ষা দফতর। ভগীরথদের দাবি, পড়ুয়া-পিছু টাকার পরিমাণ বাড়াতে হবে। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে পেশ করা স্মারকলিপিতে এই দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।