সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
একশো দিনের কাজ প্রকল্প দেখাশোনার জন্য কাউন্সিল আছে। কিন্তু সেই কাউন্সিলের বৈঠকে বিধায়কদের কেউ কেউ গরহাজির তো থাকছেনই। এমনকী তিনি ওই সব বৈঠকে থাকেন কি না, সেটাও রীতিমতো ভেবে নিয়ে বলতে হচ্ছে কোনও কোনও বিধায়ককে!
সেই জন্য বর্তমান কাউন্সিল ভেঙে দিয়ে নতুন কাউন্সিল তৈরির পরিকল্পনা করেছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কয়েক দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনের জন্য নতুন বিধায়কদের নাম পাঠাচ্ছেন তিনি।
একশো দিনের কাজে প্রকল্প দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে ‘স্টেট এমপাওয়ারমেন্ট গ্যারান্টি কাউন্সিল’। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রীই তার চেয়ারম্যান। দফতরের প্রতিমন্ত্রী ওই কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য। এ ছাড়াও কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে রয়েছেন পঞ্চায়েত, সুন্দরবন উন্নয়ন, কৃষি, বন ও সেচ দফতরের আধিকারিকেরা, দু’টি জেলা পরিষদের সভাধিপতিরা এবং তিন তৃণমূল বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনসাপেক্ষে জনপ্রতিনিধিদের মনোনয়ন করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিও কাউন্সিলের সদস্য। বৈঠকে অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারও এক জন প্রতিনিধি পাঠাতে পারে। তবে সাধারণত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি আসেন না।
এখন কাউন্সিলের তিন বিধায়ক সদস্য হলেন অখিল গিরি, মহুয়া মৈত্র ও ফিরদৌসি বেগম। হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুর দুই জেলা পরিষদের সভাধিপতি যথাক্রমে শেখ মেহেবুব রহমান এবং উত্তরা সিংহ। অভিযোগ, বিধায়কদের মধ্যে ফিরদৌসি নিয়মিত হাজিরা দিলেও বৈঠকে যোগদানের ক্ষেত্রে গড়িমসি রয়েছে অন্যদের। কাউন্সিলের বৈঠকে যান কি না, জানতে চাওয়া হলে নদিয়ার করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‘আমি চেক করে বলছি।’’ আর পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বিধায়ক অখিলের দাবি, ‘‘দু’-তিন মাস অন্তর বৈঠক হয়। যাই তো!’’ কয়েক দিন আগে কাউন্সিলের যে-বৈঠক হয়, সাটে অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন কয়েক জন জনপ্রতিনিধি।
বছরে মোটামুটি তিনটি বৈঠক করে কাউন্সিল। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ কোথায়, কী ভাবে খরচ হবে, নতুন কোনও প্রকল্প নেওয়া হবে কি না— এই সব সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ওই প্রকল্পে মমতার তৃণমূল সরকারকে সাফল্যের স্বীকৃতি দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। অথচ সেই প্রকল্পের জন্য তৈরি কাউন্সিলের বৈঠকের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিধায়কদের অনীহা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত। বিশেষত পঞ্চায়েত ভোটের আগে ১০০ দিনের কাজে গতি আনাই যখন রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, তখন এই ধরনের বৈঠকে গরহাজিরা ভুল বার্তা দিতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।