বিধানসভা ভোটের পর থেকে রাজ্যে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও বিরোধী জোট নেই। কিন্তু আগামী বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে শাসক দলের মোকাবিলায় ‘একের বিরুদ্ধে এক’ লড়াইয়ের প্রস্তুতির কথাই শুরু হয়ে গেল বিরোধী শিবিরে। পঞ্চায়েত ভোটে এমনিতেই স্থানীয় স্তরে নানা রঙের জোট হয়ে থাকে। যা দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদনের অপেক্ষা রাখে না। তবু এ বার বিরোধী বাম, কংগ্রেসের নেতাদের পাশাপাশি বিশিষ্ট জনেদের একাংশ তৃণমূলের জবর-দখল ও দল ভাঙানোর রাজনীতির বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার ডাক দিয়ে রাখলেন।
ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে সোমবার ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র উদ্যোগে ‘স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ও গণতন্ত্র’ নিয়ে কনভেনশনে সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তী, কংগ্রেসের সুখবিলাস বর্মা বা প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়েরা আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিয়ে লড়াইয়ের জন্য তৈরি হতেই বলেছেন। প্রাক্তন বিচারপতি অশোকবাবুর মতে, পঞ্চায়েতে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হবে না। আরও নানা বাধা আসবে। প্রয়োজনে আইনি লড়াই-সহ সে সবের মোকাবিলায় সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে হবে। যে ভাবে বিরোধী কণ্ঠস্বর দমন করা হচ্ছে এ রাজ্যে, তার সঙ্গে অতীতে ইউরোপের স্বৈরাচারী নানা জমানার তুলনা টেনেছেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যসচিব অর্ধেন্দু সেন।
আরও খবর
পুরুষরাও নারীকে এগোতে সাহায্য করছেন, সেগুলিকে আমরা গুরুত্ব দিই না
কনভেনশনে প্রস্তাব পাশ করে দাবি তোলা হয়েছে, ভয় দেখিয়ে বা প্রলোভনের টোপ ফেলে বিরোধীদের হাতে-থাকা পঞ্চায়েত ও পুরসভা দখল বন্ধ করতে হবে। দখল করতে না পারায় যে কয়েকটি পঞ্চায়েত বা পুরবোর্ড বিরোধীদের হাতে আছে, সেখানে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিয়ে ন্যায্য পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে। শিলিগুড়ির মেয়র অশোকবাবু এই প্রসঙ্গে তাঁদের পুরসভার উদাহরণ দিয়েছেন। রাজ্য সরকার অতি সম্প্রতি যে বিল এনে পুরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের বদলে আমলাদের বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, তারও প্রতিবাদ করা হয়েছে কনভেনশনের মঞ্চ থেকে। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিরোধী শিবিরে থাকার জন্য তাঁদের কী অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তার বিবরণ পেশ করেছেন। উপস্থিত ছিলেন কান্দির কাউন্সিলর দেবজ্যোতি রায়ও, বোর্ড দখলের জন্য যাঁকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল।