প্রতিবাদ: সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে ছবি আঁকছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ময়দানে গাঁধী-মূূর্তির নীচে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিছু দিন আগে তত্ত্ব দিয়েছিলেন, দেশি গরুর কুঁজে সূর্যের আলো পড়লে তার দুধে সোনা তৈরি হয়। মঙ্গলবার তাঁর নয়া তত্ত্ব— মানুষ যখন হতাশ এবং একা হয়ে যায়, তখনই ছবি আঁকে, গান গায়, গিটার বাজায়।
গাঁধী মূর্তির নীচে এ দিন নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে চিত্রশিল্পীদের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ছবি আঁকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ৪৩ জন শিল্পী ছবি আঁকেন। ছিলেন যোগেন চৌধুরী, ঈশা মহম্মদের মতো শিল্পীরা। মমতা ওই কর্মসূচির নাম দেন ‘চায়ে পে তুলি’। এ দিনের আঁকা ছবিগুলি নিয়ে রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরে প্রদর্শনী করা যায় কি না, সে ব্যাপারে শিল্পীদের পরামর্শও চান মুখ্যমন্ত্রী।
দিলীপবাবুর এ দিনের মন্তব্যের লক্ষ্য ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ওই কর্মসূচি। তিনি এ দিন আরও বলেন, ‘‘মানুষ যখন সঙ্গে থাকে না, তখন শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে সময় কাটাতে হয়। তাঁদের অবশ্য সমাজে কোনও প্রভাব নেই।’’
আরও পড়ুন: ‘দেবী সরস্বতীর আরাধনায় টোটোই আমার বাহন’
এর জবাবে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল হাসি। তার পর তিনি বলেন, ‘‘এ সব বিষয়ে যত কম বলা যায়, ততই মঙ্গল। তবে হ্যাঁ, এমন কোনও তত্ত্ব আমার জানা নেই। আসলে আমি এত জ্ঞানী নই। যাঁরা বলছেন, নিশ্চয়ই তাঁদের জ্ঞান আমার চেয়ে অনেক বেশি।’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর প্রতিবাদে শাহিনবাগে অবস্থানরত মহিলা ও শিশুদের সম্পর্কেও এ দিন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন দিলীপবাবু। একই বিষয়ে পার্ক সার্কাসের আন্দোলনকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারও এ দিন দুর্গাপুরে বলেন, ‘‘শাহিনবাগ বা পার্ক সার্কাসে শুধু অনুপ্রবেশকারী এবং তাঁদের দোসর মুসলমানেরাই বসেছেন। ওখানে সাধারণ মানুষ কেউ নেই।’’
যাঁরা চিঁড়ে খান, তাঁদের বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে সম্প্রতি চিহ্নিত করেছিলেন রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর ওই মতের সঙ্গে অবশ্য দিলীপবাবু সহমত নন। তিনি বলেন, ‘‘আমি চিঁড়ে খাই এবং ভালও লাগে। এতে কোনও অন্যায় নেই। উনি ওঁর কথা বলেছেন। সব বিষয়ে একমত হতে হবে, এর কোনও মানে নেই।’’
অন্য দিকে, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের পলিটব্যুরো সদস্য কবিতা কৃষ্ণন এ দিন পার্ক সার্কাস এবং খিদিরপুরে সিএএ বিরোধী অবস্থানে গিয়ে সংহতি জানান।