কাঞ্চননগরের এই ভবনেই নিখরচায় থাকবেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। নিজস্ব চিত্র
কঙ্কালেশ্বরী কালীবাড়ির পাশে পাঁচতলা ভবন। এক ঝলকে দেখলে মনে হতে পারে কোনও অতিথি নিবাস। কিন্তু আদতে এটি বৃদ্ধাবাস। আজ, সোমবার বিকেলে কাঞ্চননগরের কঙ্কালেশ্বরী মাঠে ‘নবনীড়’ নামে ওই বৃদ্ধাশ্রম উদ্বোধন করার কথা পুরমন্ত্রী তথা বর্ধমানের তৃণমূল পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিমের। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, পরে বর্ধমান ভবনে শহরের বিদায়ী কাউন্সিলর, মুষ্টিমেয় জেলা নেতাদের নিয়ে বৈঠকও করতে পারেন তিনি।
বৃদ্ধাশ্রমের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি, শহরের তৃণমূল নেতা খোকন দাস বলেন, ‘‘শহরের বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় এই বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করা হয়েছে। একশো জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে আমরা বিনামূল্যে এখানে রাখব। যাঁদের দেখার কেউ নেই তাঁদের আমরাই দেখব।’’ জানা গিয়েছে, সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ৫২ জন বয়স্ক মানুষের ঠিকানা হবে নবনীড়। প্রথম দিনে তাঁদের হাতে নতুন পোশাক-পরিচ্ছদ তুলে দেবেন খোকনবাবুরা। তিনি জানান, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল, বিভিন্ন মেলায় প্রচার করা হয়েছিল। সে সব দেখেই ওই সব অসহায় মানুষজন যোগাযোগ করেছিলেন। পরে স্থানীয় ভাবে খোঁজখবর নিয়ে তাঁদের পাকাপাকি ভাবে বৃদ্ধাশ্রমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পাঁচতলা ভবনের দু’দিকে লিফট করা হয়েছে। সামনে বাগানে রয়েছে বিশ্ববাংলার ‘লোগো’র মডেল। ভবনের ভিতরেও বিভিন্ন মহাপুরুষের ছবি লাগানো হয়েছে। পাশে রয়েছে ‘অবসারিকা’ পার্ক। খোকনবাবুর কথায়, ‘‘বয়স্করা যাতে একাকীত্বে না ভোগেন সেই কারণে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পার্কে তাঁরা ঘুরতে পারবেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও যোগ দিতে পারবেন।’’ কিন্তু এত জনকে বিনামূল্যে কি বছরের পর বছর পরিষেবা দেওয়া সম্ভব? খোকনবাবুর কথায়, ‘‘২০১৭ সালে বৃদ্ধাশ্রম তৈরির উদ্যোগ করার সময়ে ভাবিনি এত মানুষকে পাশে পাব। এখন একটা পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। বৃদ্ধাশ্রমের নামে বিয়েবাড়ি, দোকান ঘর রয়েছে। সেখান থেকেই একটা বড় অংশ খরচ উঠে আসবে। আর ভাল কাজে সাহায্য করার মানুষ তো আছেনই।’’ কলকাতার মেয়র ছাড়াও অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী, পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, মেন্টর উজ্জ্বল প্রামাণিকের।