Rail Project in Nandigram

‘মাটি’ই সঙ্কট নন্দীগ্রামের রেল প্রকল্পে

নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকে সম্মান জানাতেই রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা ঘোষণা করেছিলেন দেশপ্রাণ-নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পের। ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রকল্পের সূচনা করেন তিনি।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫০
Share:
এই সব জমি ভরাট করা হবে।

এই সব জমি ভরাট করা হবে। —নিজস্ব চিত্র।

দেড় দশক আগে চাষের ‘মাটি’ বাঁচাতেই জমি আন্দোলন করেন নন্দীগ্রামবাসী। সেই নন্দীগ্রামকে দেশের রেল মানচিত্রে জুড়তে ‘মাটি’ই এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। ঘটনাচক্রে, ১৩ বছর আগে সেই রেল প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যা নিয়ে এখন ‘উৎসাহী’
অধিকারী পরিবার।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, কাঁথির দেশপ্রাণ থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার জমি অনেকটাই নিচু। সেই জমি ভরাট করার জন্য প্রয়োজনীয় মাটি আশেপাশে মিলছে না। তাই প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর থেকে মাটি কেনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অনিলকুমার মিশ্র মানছেন, “১৮.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইনের কাজ দ্বিতীয় বার শুরু হয়েছে। দু’টো বড় সেতুর কাজ চলছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে এখানকার নিচু জমি ভরাট করতে গিয়ে। ১৮ লক্ষ কিউবিক মিটার মাটির দরকার, যা কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।”

নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকে সম্মান জানাতেই রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা ঘোষণা করেছিলেন দেশপ্রাণ-নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পের। ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রকল্পের সূচনা করেন তিনি। এর জন্য ১২১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি ছিল জমিদাতাদের পরিবারপিছু চাকরির। কাজ শুরুতে খানিকটা এগোলেও মমতা রেল মন্ত্রক থেকে সরতেই প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে। গত কয়েক মাসে অবশ্য তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এবং নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ফের ওই রেল প্রকল্প চালুর আবেদন জানিয়েছেন। তার পরই শুরু তৎপরতা।

তবে জমিদাতাদের তরফে কাজে বাধা এসেছে। তাঁদের একাংশ চাকরি পাননি বলে অভিযোগ। বহু পরিবার এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পাননি বলেও দাবি। এ নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই ভোগাচ্ছে মাটির সমস্যাও। বিশেষ করে দু’টি বড় রেলসেতু তৈরির কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাটি।

রেল সূত্রের খবর, দেশপ্রাণ থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত যে জমিতে রেললাইন পাতা হবে, তা ৪-৫ মিটার নিচু। সেই জমি ভরাট করতে ১৮ লক্ষ কিউবিক মাটি দরকার। অথচ ধারেকাছে মাটি মিলছে না। কারণ, সেখানের কোনও জমি থেকে মাটি খুঁড়লেই সেটি আরও নিচু হয়ে যাবে। ফলে ভবিষ্যতে জল জমার সমস্যা বাড়বে। তাই সেখান থেকে মাটি নেওয়া যাচ্ছে না। তা হলে? আপাতত কয়েক জন ঠিকাদারকে নিয়োগ করা হয়েছে যাঁরা ১০-১৫ কিলোমিটার দূর থেকে মাটি সরবরাহ করবেন রেলকে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার বলছেন, ‘‘তিন জন ঠিকাদারের প্রত্যেকে ৫-৬ হাজার কিউবিক মিটার মাটি সরবরাহ করবেন। ছ’মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ হতে পারে। তার পরে লাইন বসানো শুরু হবে।’’

দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের আশা, অন্য বাধা না এলে দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে দেশপ্রাণ-নন্দীগ্রাম ট্রেন পরিষেবা চালু হয়ে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন