Indian Railways

কমান্ডোর সংখ্যা কম, তবু নিরাপত্তায় জোর

রেলের নিরাপত্তা নিয়ে জিআরপি এবং আরপিএফের সমন্বয় নিয়েও বারবার প্রশ্ন উঠেছে। এর মধ্যে জিআরপি সংশ্লিষ্ট রাজ্য পুলিশের অধীনে থাকে এবং আরপিএফ রেলের অধীনে থাকে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

চলন্ত ট্রেনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দূরপাল্লার যাত্রীদের অভিযোগ নতুন নয়। এ বার দুরন্ত এক্সপ্রেসে ডাকাতির ঘটনার পরে কয়েকটি রুটে প্রথম শ্রেণির ট্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে রেল। সূত্রের খবর, রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দীর মতো প্রথম শ্রেণির ট্রেনে যাত্রী নিরাপত্তায় রেলরক্ষী বাহিনীর (আরপিএফ) সশস্ত্র কমান্ডো মোতায়েন করার কথা বিবেচনা করছে রেল। অতীতে ওই বাহিনীর পাহারায় ট্রেন চালিয়ে কয়েকটি রুটে অপরাধের সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল। এ ছাড়াও, অপরাধীদের সম্পর্কে নিজস্ব খবরের সূত্র বা ‘সোর্স নেটওয়ার্ক’ তৈরি করার উপরেও জোর দিতে চাইছে রেল। তবে রেলের একটি সূত্রের দাবি, রেলরক্ষী বাহিনীতে কমান্ডোদের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। সেটিও ভেবে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

রেলের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘কমান্ডোর সংখ্যা কম। তাও যথাসম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ট্রেনে কারা উঠছেন এবং নামছেন তাও সিসিটিভি দিয়ে নজর রাখা হচ্ছে।’’

সম্প্রতি নয়াদিল্লি-হাওড়া দুরন্ত এক্সপ্রেস রাত ১টা নাগাদ পটনা স্টেশন ছেড়েছিল। তার কিছু ক্ষণ পরেই চেন টেনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে লুঠপাট আরম্ভ করে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের একটি দল। রেলের খবর, দানাপুর ডিভিশনের খুসরুপুর এবং মনঝাউলি হল্ট স্টেশনের মাঝে ট্রেন থেকে নেমে অন্ধকারে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। যাত্রীদের অভিযোগ, ওই দলে জনা কুড়ি দুষ্কৃতী ছিল। ট্রেনের ৬-৭টি কামরা থেকে যাত্রীদের টাকাকড়ি, অলঙ্কার,মোবাইল-সহ নানা মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয় তারা। প্রসঙ্গত, নয়াদিল্লি থেকে হাওড়ার মধ্যে সাতটি স্টেশনে থামে দুরন্ত। তার মধ্যে মোগলসরাই (অধুনা দীনদয়াল উপাধ্যায়) এবং পটনা স্টেশনে ১০ মিনিট করে থামে ওই ট্রেন। ১০ মিনিটই ওই ট্রেনের সর্বোচ্চ ‘স্টপেজ টাইম’। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি পটনা স্টেশন থেকেই দুষ্কৃতীরা ওই ট্রেনে চেপেছিল?

Advertisement

রেলের নিরাপত্তা নিয়ে জিআরপি এবং আরপিএফের সমন্বয় নিয়েও বারবার প্রশ্ন উঠেছে। এর মধ্যে জিআরপি সংশ্লিষ্ট রাজ্য পুলিশের অধীনে থাকে এবং আরপিএফ রেলের অধীনে থাকে। অনেকের মতে, এর ফলেই সমন্বয়ের অভাব তৈরি হয়। কখনও কখনও দায়িত্ব নিয়ে দুই বাহিনীর দায় ঠেলাঠেলিও থাকে। অভিযোগ উঠেছে, ডাকাতির রাতে জিআরপির কর্মীরা পটনা স্টেশনে নেমে গিয়েছিলেন। তার পরেই লুঠপাট শুরু হয়। প্রশ্ন উঠেছে, জিআরপির কর্মীরা পটনা স্টেশনে নেমে যান এবং তার পরে রেলের কামরা অরক্ষিত থাকে, এই খবর কি দুষ্কৃতীদের কাছে ছিল? রেলের দাবি, সে দিনের ঘটনা সম্পর্কে পূর্ব-মধ্য রেলের রক্ষী বাহিনীর কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

যাত্রীদের অনেকের অভিযোগ, দূরপাল্লার ট্রেনে সংরক্ষিত কামরায় অনেক বাইরের লোক উঠে পড়ে। সেখানেই নিরাপত্তার সমস্যা তৈরি হয়। পূর্ব-মধ্য রেল ছাড়াও আরও কয়েকটি রুটে এই সমস্যা রয়েছে বলে মেনে নিয়েছেন রেলকর্তারাও। তাঁদের মতে, রেলরক্ষী বাহিনীও অনেক সময় এই সমস্যা মেটাতে পারে না। তাই রাতে কামরার দরজা বন্ধ করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা হয়। ওই রুটে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে স্টেশন আসার আগে অনেক সময় যাত্রীদের ব্যাগ, মোবাইল, ল্যাপটপ সামলে রাখার কথা বলে সজাগ করে দিতে হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement