টানা ২৩ বছর ধরে জেলা সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা মানবেশ চৌধুরীকে সরিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে সিপিএমের নতুন জেলা সম্পাদক করা হল অপেক্ষাকৃত কমবয়সী প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাসকে।
১৯৯২ সাল থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক ছিলেন গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা মানবেশবাবু। তাঁর বয়স ৬৫ বছর। গঙ্গারামপুরেরই বাসিন্দা নারায়ণবাববু বয়সে মানবেশবাবুর চেয়ে ৫ বছরের ছোট।
সিপিএম সূত্রের খবর, ২০১১ সালে তৃণমূলের উত্থানের পর দক্ষিণ দিনাজপুরে সিপিএমের সাংগঠনিক ভিত নড়বড়ে হয়ে ওঠে। ‘লাল দূর্গ’ বলে সিপিএমের গর্ব দক্ষিণ দিনাজপুরে একের পর এক পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ এবং বিধানসভা থেকে লোকসভা ও পুরসভায় ক্ষমতাচ্যূত হন বামেরা। গত সাড়ে তিন বছরে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে জেলায় সিপিএম জোরদার কোনও আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বলে দলের অন্দরেই অভিযোগ রয়েছে। সেই দিক থেকে দেখলে এবারের সম্মেলনে জেলা সম্পাদক পরিবর্তন হবে বলে আশায় ছিলেন দলেরই অনেকে।
একদা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তণ সভাধিপতি এবং জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ণবাবু অবশ্য দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএমের জেলা সম্পাদক পদের দাবিদার বলে দলীয় সূত্রের খবর। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। এদিন বিদায়ী জেলা সম্পাদক বলেন, “সর্বসম্মতিক্রমে নারায়ণ জেলা সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন। আমি দীর্ঘদিন দলের দায়িত্ব সামলেছি। বর্তমানে জেলা সম্পাদকমন্ডলীতে থেকে দলের হয়ে কাজ করে যাব।” নতুন জেলা সম্পাদক বলেন, “জেলায় গণতন্ত্র বিপন্ন। এই মুহূর্তে সংগঠনকে সঙ্ঘবদ্ধ করে শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের লড়াই তৈরি করাই মূল উদ্দেশ্য।”
গত ৩ এবং ৪ জানুয়ারি দুদিন ধরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে সিপিএমের ২১ তম জেলা সম্মেলন হয়। রবিবার সন্ধ্যায় প্রতিনিধি সম্মেলন থেকে সিপিএমের নতুন জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হন নারায়ণবাবু। রাজ্য সিপিএমের প্রতিনিধি ছিলেন দুই রাজ্য নেতা মানব মুখোপাধ্যায় ও মহম্মদ সেলিম। ওই সম্মেলন থেকে ৩৫ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে।