লোকসভা নির্বাচনের মুখে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ঘোষণা করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। রাষ্ট্রীয় আদিবাসী অধিকার মঞ্চের উদ্যোগে রবিবার উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের গোপালপুর এলাকায় সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের সমর্থনে একটি জনসভা হয়। সেখানে বিমানবাবু বলেন, “নির্বাচনে জিততে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। জেলায় জেলায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হুমকি এবং চোখ রাঙানির জেরে বামফ্রন্টের কর্মীরা প্রচার ও দেওয়াল লিখনের কাজ করতে পারছেন না। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।” তিনি জানান, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন শেষ করতে খুব শীঘ্রই রাজ্য বামফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লিতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবে। নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ ছাড়া রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজিয়ে রেখে নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। তিনি এদিন কংগ্রেস, তৃণমূল ও বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করেন।
বিমানবাবু ছাড়াও সভায় করণদিঘি ও চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক গোকুল রায়, আলি ইমরান রমজ ও ইটাহারের প্রাক্তন সিপিআই বিধায়ক শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ও একযোগে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির সমালোচনা করেন। প্রচারে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সিকে এদিন হাফমন্ত্রী বলে কটাক্ষ করেন সেলিম। তিনি বলেন, “কখনও এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি করার কথা বলে আবার কখনও জেলায় শিলান্যাসের বন্যা বইয়ে বিদায়ী হাফ মন্ত্রী দীপাদেবী জেলার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।” রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দীপাদেবীর দেওর পবিত্ররঞ্জন দাশমুন্সি। এই বিষয়ে দীপাদেবীর নাম না করে সেলিমের কটাক্ষ, “যিনি নিজের লোকের পাশে দাঁড়িয়ে ঘর সামলাতে পারেন না। তিনি সুখে দুঃখে আপনাদের কতটা সামলাবেন তা বোঝাই যায়।”
অন্য দিকে, এই বিষয়ে কংগ্রেস প্রার্থী দীপাদেবীর বক্তব্য, “বামফ্রন্ট ৩৪ বছরে অপশাসন ও দুর্নীতি করে রাজ্যকে অনুন্নয়নের শ্মশানে পরিণত করেছে। আর বহিরাগত সেলিমবাবু ভোটপাখি হয়ে জেলায় এসে নানা কথা বলছেন। মানুষ ও সব শুনে ভুলবেন না। আর এইমস তো বামফ্রন্ট আর তৃণমূল সরকারের জন্যই হয়নি তা জেলার মানুষজনেরা জানেন।” এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “গত ৩৪ বছরের অপশাসনের সৌজন্যে লোকসভা নির্বাচনের পর এ রাজ্য থেকে বামফ্রন্ট নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সেসব বুঝে ফ্রন্ট নেতারা নানা অপ্রচার করছে।”