এক মঞ্চে প্রতিবাদে সামিল দুই যুযুধান সংগঠন। জলপাইগুড়িতে সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য রাজনীতিতে সারদা থেকে বর্ধমান কাণ্ড নিয়ে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকলেও কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সিদ্ধান্তের বিরোধিতার প্রশ্নে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে আন্দোলনে সামিল সিপিএম এবং তৃণমূল শ্রমিক নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় ওয়্যার হাউস কর্পোরেশনের গুদাম ঘর জলপাইগুড়ি থেকে তুলে নেওয়া এবং ভারতীয় খাদ্য নিগমের রেক পাঠানো বন্ধের প্রতিবাদে যৌথ প্রতিরোধ মঞ্চ গড়ে সোমবার থেকে তাঁরা নিগমের জেলা দফতরের সামনে আমরণ আনশনে বসেছেন। সিটু ছাড়াও মঞ্চে সামিল হয়েছে আরএসপির শ্রমিক সংগঠন ইউটিইউসি এদিন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে তাঁরা গলা মিলিয়ে স্লোগান দেন একইভাবে মন দিয়ে একে অন্যের বক্তব্য শোনেন
অনশন মঞ্চের সামনে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র তেরঙ্গা পতাকার পাশেই উড়েছে সিটু-র লাল পতাকা। গোটা চত্বর লাল-তেরঙ্গায় মুড়ে ফেলা হয়। আইএনটিটিইউসি-র জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক স্বপন সরকার বলেন, “ভারতীয় খাদ্য নিগম গুদাম এবং শস্যের রেক পাঠানো বন্ধ করায় একদিকে যেমন প্রায় দশ হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছেন। অন্যদিকে জলপাইগুড়ির গুরুত্ব কমেছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে রং দেখে লাভ নেই।” প্রায় একই বক্তব্য সিটুর জেলা কমিটির সদস্য কৃষ্ণ সেনের। তাঁর কথায়, “জলপাইগুড়ির স্বার্থ আগে পরে অন্য কিছু।”
এদিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণবাবু যখন বক্তব্য রাখছেন। তখন পাশে বসে শুনছেন স্বপনবাবু। কৃষ্ণবাবু বক্তব্য শেষ করলেন, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ, সিটু জিন্দাবাদ’ বলে স্বপনবাবু মুচকি হাসলেন। সিটু-র সঙ্গে আন্দোলন করছেন। দল কিছু বলছে না? প্রশ্ন শুনে তৃণমূল শ্রমিক নেতার সাফাই, জলপাইগুড়িকে বাঁচাতে হলে এক সঙ্গে লড়তে হবে। এটা সবাই জানে।”
বিজেপি নেতৃত্ব কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখছেন। দলের জেলা সভাপতি দীপেন প্রামানিক বলেন, “যৌথ মঞ্চে কেন সংগঠনের পতাকা থাকবে? আমরা শ্রমিকদের দাবি সমর্থন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্য নিগমে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু আইএনটিটিইউসি এবং সিটু-র সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করতে পারব না।”
এদিন যে পাঁচজন শ্রমিক অনশনে বসেন তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেন যৌথ প্রতিরোধ মঞ্চের নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, গত অগস্ট মাস থেকে জলপাইগুড়ির রানিনগর এবং সুভাষনগরে কেন্দ্রীয় ওয়্যার হাউস কর্পোরেশনের গুদাম ঘর বন্ধ জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে ভারতীয় খাদ্য নিগম যে শস্যের রেক পাঠাতো সেটাও বন্ধ হয়েছে। আইএনটিটিইউসি-র জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক স্বপনবাবু জানান, অগস্ট মাস থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতরে চিঠি পাঠিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। কিন্তু লাভ হয়নি। তাই অনশনের সিদ্ধান্ত। এদিন শতাধিক শ্রমিক অনশন মঞ্চে ভিড় করেন। ভারতীয় খাদ্য নিগমের জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার শঙ্কর রাও বুডডু জেলার বাইরে। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। নিগমের অন্য কর্তারা শ্রমিকদের অনশন আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।