সেই সমেন্দ্র গেলেন তৃণমূলেই

এক সপ্তাহ আগে যিনি রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার এক অফিসারের বিরুদ্ধে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টির অভিযোগ করেছিলেন, সেই আরএসপি জেলা পরিষদ সদস্য সমেন্দ্র তিরকে দল ছাড়লেন। গত ৩ অক্টোবর, দশমীর দিন কলকাতায় গিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৩
Share:

এক সপ্তাহ আগে যিনি রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার এক অফিসারের বিরুদ্ধে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টির অভিযোগ করেছিলেন, সেই আরএসপি জেলা পরিষদ সদস্য সমেন্দ্র তিরকে দল ছাড়লেন। গত ৩ অক্টোবর, দশমীর দিন কলকাতায় গিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে ডিআইজি-র তরফে চাপ দেওয়ার অভিযোগও তুলে নিয়েছেন। এখন সমেন্দ্রবাবুর দাবি, “আমি কোনদিনই অভিযোগ করিনি। আরএসপি-র তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল থানায়। আমাকে দিয়ে সই করানো হয়েছিল। আমার কোনও অভিযোগ নেই। বরং তৃণমূল যে ভাবে উন্নয়নের কাজে নেমেছে তাতে সামিল হতেই চাইছি।”

Advertisement

এই ঘটনার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ যে ভিত্তিহীন সেই দাবি করেছেন। সৌরভবাবু বলেন, “সমেন্দ্রবাবু স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।” তাঁর অভিযোগ, “বাজার গরম করতে হুমকি ভয় ও প্রলোভনের মতো মিথ্যে অভিযোগ এনে বামফ্রন্ট চমকের রাজনীতি করতে চাইছে। আগামী ১৬ অক্টোবর আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ গঠনের দিন ১৮ জনের মধ্যে ১২ জন সদস্যের সমর্থন আমরা পাব।”

গত ২২ সেপ্টেম্বর আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের আরএসপি সদস্য সমেন্দ্রবাবুকে সশস্ত্র বাহিনীর এক ডিআইজি তাঁর নিজের দফতরে ডেকে সরাসরি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা বলেন। এ ছাড়া কয়েকজন বাম সদস্যকে দল বদলের জন্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বামফ্রন্টের কুমারগ্রাম ব্লক কমিটির পক্ষ থেকে কুমারগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগও জমা দেওয়া হয়। গত ৩ অক্টোবর কাচরাপাড়ায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে সমেন্দ্রবাবু তৃণমূলে যোগ দেন।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আলিপুরদুয়ারকে জেলা ঘোষণার পরেই মাত্র একটি আসন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিলেন, আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ তৃণমূল দখল করবে। আমরা সেদিনই বুঝে গিয়েছিলেম ওরা বাম সদস্যের কিনে নেওয়ার কাজে নামছেন। কয়েকমাসের মধ্যে সে ভাবনা বাস্তবায়িত হল।” তাঁর অভিযোগ, “মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি সহ নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে অগণতান্ত্রিক উপায়ে আমাদের সদস্যদের দলবদলে বাধ্যে করা হয়েছে।”

জলপাইগুড়ি জেলাকে ভাগ করে আলিপুরদুয়ার জেলা গঠনের পরে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ১৮ টি আসন আলিপুরদুয়ারের মধ্যে পড়ে। ১৮ টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্টের দখলে রয়েছে ১৩টি, কংগ্রেসের ৩টি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হাতে ১টি ও তৃণমূলের হাতেও ১টি। পরে কংগ্রেসের ৩ জন ও বামফ্রন্টের ৪ জন তৃণমূলে যোগ দিলে তৃণমূলের শক্তি দাঁড়ায় ৮ জনে। সমেন্দ্র বাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় শাসকদলের হাতে এখন ৯টি আসন। তৃণমূলের দাবি আরও দুই সদস্যের সমর্থন তাদের সঙ্গে রয়েছে। সম্প্রতি পঞ্চায়েত দফতর আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ গঠনের নির্দেশিকা জারি করেছে। আগামী ১৬ অক্টোবর জেলা পরিষদের বোর্ড গঠন। আরএসপির জেলা সম্পাদক সুনীল বণিকের অভিযোগ,“পুলিশ দিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে। টাকার প্রলোভন দেওয়া চলছে। এভাবে অগণতান্ত্রিক ভাবে আমাদের সদস্যদের দলবদলে বাধ্য করেছে তৃণমূল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement