শিলিগুড়িতে দ্রুত পুরনির্বাচন চায় বামেরা

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিলিগুড়ি পুরসভায় নির্বাচনের দাবিতে সরব হল দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। বুধবার সকালে শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনে জেলা বামফ্রন্টের বৈঠক হয়। সেখানে ওই দাবিতে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফ্রন্ট সূত্রের খবর, আপাতত ঠিক হয়েছে, নির্বাচনের দাবিতে প্রথমে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক পুনীত যাদবকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এর পরে শিলিগুড়িতে ভোটের দাবিতে কনভেনশন করবে ফ্রন্ট। সেই সঙ্গে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আগামী পাঁচ মাসের জন্য কোনও রকম প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হলে বা ফের মেয়র নির্বাচনের প্রক্রিয়া সামনে আসলেও তাতে যোগ দেবে না বামফ্রন্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০২:০৪
Share:

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিলিগুড়ি পুরসভায় নির্বাচনের দাবিতে সরব হল দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। বুধবার সকালে শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনে জেলা বামফ্রন্টের বৈঠক হয়। সেখানে ওই দাবিতে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফ্রন্ট সূত্রের খবর, আপাতত ঠিক হয়েছে, নির্বাচনের দাবিতে প্রথমে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক পুনীত যাদবকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এর পরে শিলিগুড়িতে ভোটের দাবিতে কনভেনশন করবে ফ্রন্ট। সেই সঙ্গে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আগামী পাঁচ মাসের জন্য কোনও রকম প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হলে বা ফের মেয়র নির্বাচনের প্রক্রিয়া সামনে আসলেও তাতে যোগ দেবে না বামফ্রন্ট।

Advertisement

গত মঙ্গলবার এই পুরসভার কংগ্রেসের মেয়র এবং মেয়র পারিষদেরা পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ১ অক্টোবর পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, “কংগ্রেস একটি সংখ্যালঘু বোর্ড চালাচ্ছিল। নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে মেয়রের আগেই সরে দাঁড়ানো উচিত ছিল।” তিনি জানান, শহরের মানুষের জন্য তাঁরা চিন্তিত। গত প্রায় ৫ বছরে শহরের পরিষেবা বলে কিছু ছিল না। তাঁর দাবি, “এর জন্য কংগ্রেস এবং তৃণমূলই দায়ী। আমাদের পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও এ ভাবে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করব না। আমরা দ্রুত নতুন করে নির্বাচন চাই।”

Advertisement

রাজ্য জুড়ে লোকসভা ভোটে বামেদের যে শোচনীয় ফল হয়েছে, তার থেকে বাদ যায়নি শিলিগুড়িও। বর্তমানে শিলিগুড়ির ৪৭ আসনের পুরসভায় বামেদের দখলে ১৮টি আসন। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ৪টি আসনে নিজেদের এক নম্বরে ধরে রাখতে পেরেছে বামেরা। অন্য ওয়ার্ডগুলিতে অনেক এগিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি। এই অবস্থায় নতুন ভাবে পুরসভা নির্বাচনে যাওয়ার প্রসঙ্গে অশোকবাবুর যুক্তি, “আমরা লোকসভার ফল বিশ্লেষণ করছি। কিন্তু আমরা ভোটকে ভয় পাই না। তৃণমূল তা পাচ্ছে। কারণ, লোকসভায় ৩৪টি আসন পেলেও পুরভোট স্থানীয় স্তরের ভোট।” তিনি বলেন, “কংগ্রেসের জোটসঙ্গী হয়েও বোর্ড চালিয়েছে তৃণমূল। দুই দলই ব্যর্থ হয়েছে। এখানে ভোট হলে এসজেডিএ দুর্নীতি, টেট কেলেঙ্কারি, সারদা কান্ড, ফোর জি-র মতো দুর্নীতি সামনে আসবে।”

২০০৯ সালে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট বিপুল ভাবে ভোটে জিতে পুরসভার ক্ষমতায় আসে। কিন্তু পুরসভার ইতিহাসে এবারই প্রথম একাধিকবার মেয়র, ডেপুটি মেয়র এবং চেয়ারম্যান বদল হয়। নিজেদের মধ্যে মারামারি, গোলমাল কিছুই বাদ থাকেনি। শহরের মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। অশোকবাবু বলেন, “কিন্তু ২৯ বছরের পুরসভার বাম আমলে তা কখনও হয়নি। আমরা এসবই ভোটে মানুষের সামনে নিয়ে প্রচার করব।”

যদিও আগামী দিনে ভোটে লড়লেও শহরে পুরভোটে বামফ্রন্ট কতটা, কী ধরনের ফল করবে, তা নিয়ে ফ্রন্টের একাংশের মধ্যেই সংশয় রয়েছে। ওই বাম নেতারা জানিয়েছেন, বামেরা এখন গোটা রাজ্যে কার্যত প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনে তা দেখা যাচ্ছে। সিপিএমের শরিক দলের একাধিক নেতা মনে করেন, দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের নেতৃত্বে নতুন মুখ আনা জরুরি। সেই সঙ্গে আগামী পুর নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় যাতে নতুন ও গ্রহণযোগ্য মুখ রাখা হয়, সে ব্যাপারেও জোর দিয়েছেন বাম শরিক নেতারা।

ভোটের প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “অশোকবাবুদের কথার কোনও জবাব দিতে চাই না। বামফ্রন্ট এখন সর্বত্র গুরুত্বহীন। আমরা এখনই ভোট নিয়ে ভাবছি না। আর এখনও বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়নি। পুর দফতর বোর্ডের অবস্থা কী হবে, তা জানাবে। আমরা আপাতত সেই দিকে নজর রাখছি।”

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা বিদায়ী মেয়র পরিষদ সুজয় ঘটক বলেন, “বামেরা মুখেই কেবল বড় বড় কথা বলেন। পুরসভায় বাজেট পাশ থেকে শুরু করে সব সময় নেতিবাচক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছে। সেখানে শহরের মানুষের স্বার্থের কথা ওঁদের মুখে মানায় না। তা ছাড়া, সর্বত্র সিপিএম-সহ বামেরা এখন অপ্রাসঙ্গিক।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement