রেল বাজেটে প্রাপ্তির ঘর ফাঁকা, ক্ষোভ

এবারেও রেল বাজেটে প্রাপ্তির ঘর শূন্য দক্ষিণ দিনাজপুরের। বালুরঘাট- একলাখি ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু বা হিলি পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেলপথের জন্য অর্থ বরাদ্দ, কোনও দিশাই মেলেনি। তাই আবারও হতাশ জেলাবাসী।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০১
Share:

রেল বাজেট শুনতে রেডিওতে কান কুলিদের। ছবি: অমিত মোহান্ত।

এবারেও রেল বাজেটে প্রাপ্তির ঘর শূন্য দক্ষিণ দিনাজপুরের। বালুরঘাট- একলাখি ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু বা হিলি পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেলপথের জন্য অর্থ বরাদ্দ, কোনও দিশাই মেলেনি। তাই আবারও হতাশ জেলাবাসী।

Advertisement

২০০৪ সালে প্রথম রেল সংযোগ হয় বালুরঘাটে। তার পর প্রায় ১১ বছর কেটে গিয়েছে। অনেক বাজেট পেশ হয়েছে। আজও বালুরঘাট-একলাখি পর্যন্ত মাত্র ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে হয়নি সিগন্যালিং ব্যবস্থা। জেলার মানুষ আশা করেছিলেন বালুরঘাট থেকে একলাখি যাত্রাপথে অসুরক্ষিত ট্রেনযাত্রার অবসান ঘটাতে এবারের রেল বাজেটে সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালুর সংস্থান থাকবে। ঝুলে থাকা বালুরঘাট-হিলি প্রস্তাবিত রেলপথ সম্প্রসারণে বাজেটে অর্থ বরাদ্দের আশাও করেছিলেন বাসিন্দাদের অনেকে। কিন্তু কোনও আশাই পূরণ হয়নি।

দীর্ঘদিন ধরে বালুরঘাট রেল উন্নয়ন কমিটি সহ একাধিক সংগঠন ওই দাবিগুলি নিয়ে রেল দফতরে দরবার করছেন। বালুরঘাট রেল উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক পীযূষকান্তি দেব বলেন, “রেলের আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা এবারের বাজেটে রেলমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। অথচ হিলি সীমান্ত পর্যন্ত রেল সম্প্রসারিত হলে পণ্য পরিবহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বহির্বাণিজ্যে কেন্দ্রীয় সরকার আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সমর্থ হতো। তাঁর অভিযোগ, জেলার ১৭ লক্ষ মানুষের নিরাপত্তার কথাও ভাবা হল না বাজেটে। এর প্রতিবাদে জেলা জুড়ে আন্দোলন হবে বলে পীযূষবাবু ঘোষণা করেছেন। জেলা চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক সুদীপ বাগচী বলেন, “জেলার রেল উন্নয়নের জন্য ডিআরএম থেকে রেল মন্ত্রকে কত দাবি ডেপুটেশন দেওয়া হল। কিছুই হল না। আমরা হতাশ।”

Advertisement

২০০৪ সালে রেল চালুর পর থেকে বালুরঘাটে একটি লিঙ্ক প্যাসেঞ্জার ট্রেন মালদহ স্টেশনে গিয়ে গৌড় এক্সপ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রোজ বিকেলে শিয়ালদহের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই লিঙ্ক ট্রেন হামেশা দেরী করে ছাড়ায় মালদহ থেকে গৌড় ধরা সম্ভব হয় না। একইভাবে দিনের বালুরঘাট-নিউ জলপাইগুড়ি ইন্টারসিটি চলারও সময়ের ঠিক নেই। দুর্ভোগ ও হয়রানি রোধে বালুরঘাট থেকে কলকাতা সরাসরি একটি অতিরিক্ত ট্রেন চালুর দাবিও জানিয়ে আসছেন বাসিন্দারা। সেই দাবিও অধরাই থেকে গেল।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, “রেলমন্ত্রকে থাকার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জেলার রেল উন্নয়নের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প নিয়েছিলেন। কেন্দ্রে পালাবদলের ফলে সেগুলি বজায় থাকবে এমন আশা আমরা করিনি। বালুরঘাটে ডবল লাইন, স্টেশনের পরিকাঠামো উন্নয়নের মতো চালু প্রকল্পের কাজও মাঝপথে থমকে রয়েছে। এই বাজেট থেকেই মানুষ ফারাকটা দেখছেন।”

জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “গত বছর লোকসভা ভোটের আগে প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর চেষ্টায় অন্তর্বর্তী বাজেটে সপ্তাহে দুদিন বালুরঘাট-হাওড়া ট্রেন চালু হয়েছিল। এবারে তো প্রাপ্তির ঘর শূন্য। কলকাতা-বালুরঘাট সরাসরি রাতের একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের দাবি থেকে আমরা সরছি না। যাত্রী সুরক্ষায় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আন্দোলন চলবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement