সাজানো হয়েছে কোচবিহার ভবন। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর আত্মীয়দের থাকার সুবিধার জন্য নতুন করে সাজানো হল কোচবিহার ভবন। অভিযোগ,সংস্কারের অভাবে মাস ছয়েক ধরেই ওই ভবন বেহাল হয়ে পড়েছিল। ঘরগুলি হয়ে উঠেছিল থাকার অযোগ্য। কয়েক বছর আগে একবার ওই ভবনে জুয়োর আসর বসানোর অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। এর পরেই ওই ভবনের খোলনলচে বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর এবং কোচবিহার উন্নয়ন ফান্ডের বরাদ্দ টাকায় ভবনের দ্বিতীয় দফার কাজ শুরু করা হয়। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ওই কাজের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে ওই ভবন নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। কোচবিহারের বাসিন্দাদের সুবিধের জন্য ওই কাজ করা হয়েছে। কম খরচে সাধারণ মানুষ সেখানে থাকার সুবিধে পাবেন।” কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “ওই ভবনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ইতিমধ্যে সেটি চালু করা হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ১৯৯৪ সালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ওই ভবন চালু করা হয়। সেই সময়ের মন্ত্রী দীনেশ ডাকুয়া ওই ভবনের উদ্বোধন করেন। তখন একসঙ্গে ১০ জনের থাকার ব্যবস্থা ছিল সেখানে। প্রথম কয়েক বছর ভবনটি ভালভাবেই চলছিল। পরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটি বেহাল হয়ে পড়ে। একসময় ভাড়া দিয়ে ওই ভবনে আর কেউ থাকতে চাইতেন না। সে সময় সেখানে জুয়োর আসর বসানোর অভিযোগ ওঠে।
প্রশানের তরফে জানানো হয়েছে, এবারে ভবনটি দোতলা করা হয়েছে। দোতলায় পাঁচটি ঘর মিলিয়ে মোট ছয়টি নতুন ঘর করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরের জন্য আলাদা করে শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে একসঙ্গে ২৮ জনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। প্রতিটি ঘরের মেঝেতে পাথর বসিয়ে ঝাঁ চকচকে করা হয়েছে। শয্যা প্রতি ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। কোচবিহারের বাসিন্দাদের জন্য শয্যা প্রতি ৭৫ টাকা এবং বাইরের জেলার বাসিন্দাদের জন্য শয্যা প্রতি ১০০ টাকা করে ভাড়া ঠিক করা হয়েছে। ওই ভবন দেখাশোনার জন্য রাজকুমার বর্মন নামে একজন কর্মী রয়েছেন সেখানে। তিনি জানান, এখনও ভবন তৈরির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি তাই আংশিক ভাবে ভাড়া দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে।
কোচবিহারের বিধায়ক তথা পূূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “প্রতি মাসে কয়েক’শো মানুষ চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই গরিব মানুষ। ওই মানুষদের থাকার জন্য কম খরচে একটি ভবনের খুব প্রয়োজন ছিল। তা করতে পেরে আমরা খুশি।”