মদের ঠেক ভাঙতে উদ্যোগী মহিলাকে পিটিয়ে খুন গাজলে

মদের ঠেক ভাঙতে উদ্যোগী হয়েছিলেন এক মহিলা। মদের ঠেকের মালিক ও তাঁর পরিবারের লোকজন পরে তাঁকে লাঠি রড দিয়ে মারধর করে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে মালদহের গাজল থানার পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোকণা গ্রামে। ওই মহিলার নাম গীতারানি মণ্ডল (৪০)। তাঁর স্বামী জিতেন মণ্ডল, কিশোরী কন্যা ঝুমা ও ছেলে গৌতমকেও মারধর করা হয়। ওই মদের ঠেকের মালিকের স্ত্রী তারাময়ী মণ্ডল ও তাঁদের মেয়ে সীতারানি মণ্ডলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মদের ঠেকের মালিক ও তার জামাই পলাতক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৯
Share:

মালদহের গাজলে নিহত গীতারানি মণ্ডলের স্বামী জিতেন মণ্ডল (বাঁ দিকে)। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

মদের ঠেক ভাঙতে উদ্যোগী হয়েছিলেন এক মহিলা। মদের ঠেকের মালিক ও তাঁর পরিবারের লোকজন পরে তাঁকে লাঠি রড দিয়ে মারধর করে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে মালদহের গাজল থানার পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোকণা গ্রামে। ওই মহিলার নাম গীতারানি মণ্ডল (৪০)। তাঁর স্বামী জিতেন মণ্ডল, কিশোরী কন্যা ঝুমা ও ছেলে গৌতমকেও মারধর করা হয়। ওই মদের ঠেকের মালিকের স্ত্রী তারাময়ী মণ্ডল ও তাঁদের মেয়ে সীতারানি মণ্ডলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মদের ঠেকের মালিক ও তার জামাই পলাতক।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মদের ঠেকটি নিয়ে গ্রামে অসন্তোষ ছিল। গীতারানির নেতৃত্বে মাস দু’য়েক আগে গ্রামের মহিলারাই মদের আসর ভাঙতে দোকানটি ভেঙে দেন। তারপরে কিছু দিন মদের কারবার বন্ধ ছিল। সপ্তাহখানেক আগে ফের দোকান খোলে। রবিবার সন্ধ্যায় ছেলের খোঁজে সেখানে গিয়েছিলেন গীতারানি। সঙ্গে ছিল মেয়ে ঝুমা। তাঁদের দেখতে পেয়েই ওই মদের ঠেকের মালিক, তাঁর স্ত্রী, কন্যা ও জামাই মিলে গীতারানিকে মারধর শুরু করে। মা-কে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত হয় ঝুমাও। জিতেনবাবু গৌতমকে নিয়ে সেখানে পৌঁছলে তাঁদেরও প্রচণ্ড মারধর করা হয়। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন গ্রামের লোক। মদের ঠেকের মালিক ও জামাই পালিয়ে যায়।

গ্রামের বাসিন্দারাই তখন গীতারানিদের হাতিমারি হাসপাতালে ভর্তি করান। তবে গীতারানিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেই রাতেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার রাতে তাঁকে মালদহ থেকে কলকাতায় রেফার করা হলে পথেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এরপরেই জিতেনবাবু ওই মদের ঠেকের মালিক ও তাঁর পরিবারের তিন জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয় তারাময়ী ও সীতারানিকে। মঙ্গলবার বিচারক ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

জিতেনবাবুরা সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আমার স্ত্রী ওই মদের ঠেক তুলে দিয়েছিল। তাই তার মালিক ও তার পরিবার আমার স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন করেছে।” জিতেনবাবুর সামান্য জমি রয়েছে। তাতে চাষবাস করেই সংসার চলে।

গ্রামে এই ঘটনার পরে ক্ষোভ চড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালালে গ্রামের মহিলাদের এই কাজে এগিয়ে আসতে হত না। গাজলের বিধায়ক তৃণমূলের সুশীল রায়ের কথায়, “ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে বেআইনি ঠেকে নিয়মিত অভিযান করা হয়। তা আরও বাড়াতে বলব।” পুলিশও একই দাবি করেছে। আবগারি দফতরের জেলা আধিকারিক রাম রায় সরকারও জানান, তাঁরা নিয়মিত ঠেকগুলিতে অভিযান চালান। প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement