দুর্ঘটনায় মৃতদের শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র।
ট্রাকের সঙ্গে বরযাত্রী বোঝাই পিক-আপ ভ্যানের ধাক্কায় মৃত্যু হল চার বরযাত্রীর। সোমবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায়। ওই ঘটনায় আহত আরও ৭ জনকে শিলিগুড়ির বিভিন্ন নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। যে ট্রাকটি ধাক্কা মেরেছে, রাত পর্যন্ত সেটিকে খঁুজে বের করতে পারেনি পুলিশ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত পিক-আপ ভ্যানটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত অঙ্কিত শাহ (২২), দীনেশ শাহ (২৩), দীপু গুপ্ত (১৮) এবং সূরজ কুমার (২২) প্রত্যেকেই শিলিগুড়ির সন্তোষীনগরের বাসিন্দা। ঘটনার জেরে বাতিল করা হয়েছে বিয়ের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানও। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যান প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। মৃত ও আহতদের যাতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, তার দাবি করেন তিনি। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি সদর অংমু গ্যামসো পাল বলেন, “ট্রাকটি খোঁজা হচ্ছে। দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যায় সন্তোষীনগরের বাসিন্দা দীনেশ শাহের বিয়ে ছিল নকশালবাড়ির তোতারামজোতে। পাড়া থেকে বাস ও কয়েকটি ছোট গাড়ি করে বিয়ের অনুষ্ঠানে যান শ’খানেক যাত্রী। রাত পর্যন্ত খাওয়াদাওয়া চলে। রাতেই বেশিরভাগ বরযাত্রীর লোকজন ফিরে আসেন। বাকিরা ভোরে একটি পিক-আপ ভ্যানের সামনে পিছনে বোঝাই হয়ে শিলিগুড়ি ফিরছিলেন। গাড়িতে ১১ জন ছিল। মাটিগাড়ার উত্তরায়ণ উপনগরীর কাছে উল্টো দিক থেকে আসা কোনও ট্রাক তাঁদের ধাক্কা মারে। গাড়ির সামনে যে চার জন বসেছিলেন, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটায় বেশ কিছুক্ষণ দেহগুলি পড়ে থাকে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করে।
এই খবর পাড়ায় ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের লোকজন এলাকায় ভিড় জমায়। মৃত অঙ্কিতের বাবা জগন্নাথ শাহ বলেন, “ভোর চারটার সময় পাড়ারই শত্রুঘ্নের পিক আপ ভ্যান নিয়ে তাঁরা রওনা হয়েছিল। পরে ৬টা নাগাদ বাড়িতে পুলিশের ফোন আসায় আমরা ঘটনার কথা জানতে পারি।” মৃত দীপুর বাবা সত্যনারায়ণবাবু ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। গাড়ির সামনে বসা চারজনই মারা যান। তবে গাড়ি কে চালাচ্ছিল তা জানা যায়নি। গাড়ির মালিক শত্রুঘ্নও গুরুতর জখম। বাকি আহতরা হলেন রাজু প্রসাদ, শুভম তিওয়ারি, অভিষেক শাহ, উজ্জ্বল ঠাকুর, অজয় শাহ ও সুমিত শাহ।