মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে সভা করিয়ে পালে হাওয়া টানতে তৎপরতা

বালুরঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের নাট্যকর্মীকে প্রার্থী করা হয়েছে। আসন নিয়ে ‘নিশ্চিন্ত’ থাকলেও গত দুইমাস ধরে ঘটনা পরম্পরায় ঘরে বাইরে তৃণমূলের উপর চাপ বেড়েছে। জেলাবাসীর একাংশের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বিরূপ’ মনোভাবের আঁচ সুদূর কলকাতায় পৌঁছেছে। দলীয় সূত্রের খবর, তাই হাওয়া ঘোরাতে পছন্দের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের হয়ে একাধিক প্রচারসভা করতে বালুরঘাটে আসছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৬
Share:

বালুরঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের নাট্যকর্মীকে প্রার্থী করা হয়েছে। আসন নিয়ে ‘নিশ্চিন্ত’ থাকলেও গত দুইমাস ধরে ঘটনা পরম্পরায় ঘরে বাইরে তৃণমূলের উপর চাপ বেড়েছে। জেলাবাসীর একাংশের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বিরূপ’ মনোভাবের আঁচ সুদূর কলকাতায় পৌঁছেছে। দলীয় সূত্রের খবর, তাই হাওয়া ঘোরাতে পছন্দের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের হয়ে একাধিক প্রচারসভা করতে বালুরঘাটে আসছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৬ এপ্রিল বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ এবং গঙ্গারামপুরে মুখ্যমন্ত্রী জনসভা করবেন।

Advertisement

গত ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিনে দক্ষিণ দিনাজপুরের ৬টির মধ্যে জোটসঙ্গী কংগ্রেসের একটি আসন (কুশমন্ডি) বাদে ৫টি বিধানসভা এলাকায় জনসভা করেছিলেন। ওই ৫টিতেই জয় পায় তৃণমূল। এরপর সারদা থেকে টেট পরীক্ষার নানা অভিযোগের পাশাপাশি স্থানীয় বিধায়কদের আচরণ ও ভূমিকা নিয়ে জনমানসে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরই মধ্যে অর্পিতার নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা হয়। বহিরাগত প্রার্থী নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ দেখা দেয়। কয়েকটি দলীয় ঘরোয়া সভা এবং কর্মিসভা তা নানা ভাবে প্রকাশ্যেও আসে।

দলীয় সূত্রের খবর, এই লোকসভা কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভার মধ্যে বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ, তপন এলাকায় এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের কিছু ক্ষোভ রয়েছে বলেও দলের অন্দরে খবর পৌঁছেছে। বুধবার তপনের চৌরঙ্গীতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পথসভায় তেমন ভিড় না হওয়ায় দলের মধ্যে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। কুমারগঞ্জ এবং গঙ্গারামপুর পরপর দুটি সভায় বহিরাগত সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় অর্পিতাকে। বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন হিলিতে অর্পিতার সভাকে ঘিরে দলীয় কর্মীদের মধ্যে লাঠালাঠিতে রক্তারক্তি কান্ড ঘটে যায়। হিলির রোডশো-তে বিনা অনুমতিতে বাইক মিছিলের জেরে ২৫ জনকে ধরপাকড়ের ঘটনার জেরে অস্বস্তি দলের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছয়। উপরন্তু বালুরঘাটে এক ব্লক কংগ্রেস নেতাকে গুলি করার ঘটনায় তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় এক গ্রামপঞ্চায়েত প্রধানের নাম জড়ানোয় দলের ভিতরে চাপানউতোর অব্যাহত।

Advertisement

গত শুক্রবার বালুরঘাটে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মিসভায় পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে বিধিভঙ্গের অভিযোগে রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। নির্বাচন কমিশন হস্তক্ষেপ করে। সব মিলিয়ে ঘরে বাইরে একের পর বিতর্কে তৃণমূলের ভরসার-বালুরঘাটে এখন জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সে কারণে বালুরঘাট কেন্দ্রের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রকে সামনে রেখে জেলা জুড়ে জমায়েতের মাধ্যমে দলনেত্রীকে দিয়ে সভা করে পালের হাওয়া ঘোরাতে তৎপর তৃণমূল।

যে ৩টি কেন্দ্রে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে, ঘটনাচক্রে বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ এবং গঙ্গারামপুর এই ৩টি কেন্দ্রই পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী ও তাঁর অনুগামী বিধায়কের এলাকা বলে পরিচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement