বন্ধ হয়ে গেল রহিমাবাদ চা বাগান

ভয় দেখাচ্ছেন শ্রমিকেরা, নালিশ

আন্দোলনের নাম করে ভয় দেখাচ্ছেন শ্রমিকরা। এ অভিযোগ তুলে রহিমাবাদ চা বাগানে লক আউটের নোটিস ঝোলাল কর্তৃপক্ষ। রবিবার ভোরে গেটে নোটিস ঝুলিয়ে কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন। শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া রেশন মেটানো, পানীয় জল সরবারহ, আবাসন মেরামত সহ বিভিন্ন দাবিতে গত সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৪ ০১:১৯
Share:

নোটিস ঝুলিয়ে বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। রবিবার শামুকতলায় ছবিটি তুলেছেন রাজু সাহা।

আন্দোলনের নাম করে ভয় দেখাচ্ছেন শ্রমিকরা। এ অভিযোগ তুলে রহিমাবাদ চা বাগানে লক আউটের নোটিস ঝোলাল কর্তৃপক্ষ। রবিবার ভোরে গেটে নোটিস ঝুলিয়ে কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন। শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া রেশন মেটানো, পানীয় জল সরবারহ, আবাসন মেরামত সহ বিভিন্ন দাবিতে গত সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল। মালিকপক্ষের নানা একতরফা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় উল্টে তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলে শ্রমিকেরা পাল্টা অভিযোগ করেছেন।

Advertisement

বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার রাতে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে শামুকতলা থানায় অভিযোগ করেন শ্রমিকদের একাংশ। তার পরেই রবিবার ভোরে গেটে লক আউটের নোটিস ঝোলানো হয়েছে বলে অভিযোগ। কুমারগ্রাম ব্লকের রহিমাবাদ চা বাগান হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৭৪৪ জন স্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী সহ তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অনিশ্চয়তার মুখে পড়লেন।

উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম কমিশনার মহম্মদ রিজওয়ান বলেন, “রহিমাবাদ চা বাগানের কর্তৃপক্ষের কোন নোটিস আমরা এখনও পাইনি। নোটিস পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

Advertisement

শ্রমিকদের অভিযোগ, বাগানে ২০ সপ্তাহের রেশন বকেয়া রয়েছে। প্রথম সপ্তাহের পরিবর্তে মাসের শেষ সপ্তাহে টাকা দেওয়া, স্বাস্থ্য পরিষেবা, জ্বালানি, কম্বল ছাতা মিলছে না। শ্রমিক আবাসন মেরামত করার দাবি জানালেও ফল মেলেনি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে প্রতিমাসে একটি করে বকেয়া রেশন ও অন্য পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত হলেও মালিক পক্ষ সেই মতো পদক্ষেপ করছে না বলে বাগানের সব শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকেই অভিযোগ করা হয়েছে। দাবি পূরণে চাপ দিতে শান্তিপূর্ণ ভাবেই আন্দোলন শুরু হয়। যদিও চা বাগানের ম্যানেজার ভরত শর্মা বলেন, “বকেয়া চেয়ে আন্দোলনের নামে হুমকি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তা অভাব বোধ করছি। শনিবার রাতে আমাদের উপর হামলা চালানোর ছক হয়। পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচেছি। এই অবস্থায় বাগান চালানো অসম্ভব। বাধ্য হয়ে লক আউট ঘোষণা করা হয়।”

শ্রমিক সংগঠনের তরফে মালিক পক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত টি প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ইয়াসিন আনসারি এবং সিপিএম প্রভাবিত চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের মহন্মদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “এমন কোনও কিছু ঘটেনি যে বাগান বন্ধ করে দিতে হবে। উল্টে এক সপ্তাহ ধরে মালিক পক্ষ একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে বাগানের কারখানায় সব চা পাতা না পাঠিয়ে কিছু অংশ বাইরে পাঠাচ্ছিলেন। কারণ জানতে গেলে বাগানের ম্যানেজার দুর্ব্যবহার করেন। গত শনিবার রাতে সে বিষয়ে শামুকতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।”

বাগানের শ্রমিক শ্যাম ঝাঁ বলেন, “খাবার নেই। রেশন, মজুরি মিলছে না। প্রায় এক হাজার শ্রমিক কর্মচারীর পরিবার বাগান বন্ধ হয়ে গেলে কী করে সংসার চালাবেন তা জানি না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement