ভোটে লাগবে স্কুলবাস, উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা

ভোটের কাজে এ বার শিলিগুড়ি শহরের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের নিত্য যাতায়াতের বাসও নেওয়া হচ্ছে। বাসের অভাবে পড়ুয়ারা বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে অসুবিধায় পড়তে পারে আশঙ্কায় ভোটের আগে ও পরে কয়েকদিন স্কুল বন্ধ রাখার কথা পর্যন্ত ভাবতে হচ্ছে অনেক স্কুলকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৪
Share:

ভোটের কাজে এ বার শিলিগুড়ি শহরের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের নিত্য যাতায়াতের বাসও নেওয়া হচ্ছে। বাসের অভাবে পড়ুয়ারা বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে অসুবিধায় পড়তে পারে আশঙ্কায় ভোটের আগে ও পরে কয়েকদিন স্কুল বন্ধ রাখার কথা পর্যন্ত ভাবতে হচ্ছে অনেক স্কুলকে। গড়ে ৫ দিন স্কুল বন্ধের প্রস্তুতি নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই বাস নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে। যেমন, শিলিগুড়িতে প্রশাসনের তরফে ১৫ এপ্রিল থেকে বাস লাগবে বলে জানানো হয়েছে। সেই মতো প্রস্তুতি নিয়েছেন মালিকরা। তার উপরে সম্প্রতি শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাস নেওয়া হবে। ওই বাসে বাইরে থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের আনা হবে। এখানেই শেষ নয়, দার্জিলিঙের ভোট (১৭ এপ্রিল) ফুরোলে শিলিগুড়ির একাধিক স্কুলের বাস উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন নেবে বলে বাস মালিকদের কয়েকজনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভোট হবে ২৪ এপ্রিল। ফলে আগামী ১০ এপ্রিল থেকে প্রায় ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত একাধিক স্কুলবাস পাওয়া যাবে না। এই পরিস্থিতিতে এত দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন শিলিগুড়ির স্কুল অভিভাবকদের সংগঠন। ইতিমধ্যেই ওই ফোরামের পক্ষ থেকে সন্দীপন ভট্টাচার্য জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা গোটা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন। সন্দীপনবাবু বলেন, “জেলার বাস জেলার ভোটের কাজে নিতেই পারে প্রশাসন। তা বলে পাশের জেলায় তা নেওয়া হলে প্রায় তিন সপ্তাহ স্কুলে ক্লাস হবে না। ক’দিন পরেই গরমের ছুটি। ফলে সিলেবাস শেষ হতে দেরি হয়ে যাবে। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে সব জানাব।”

দার্জিলিঙের জেলাশাসকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে ভোটে পুলিশ, ভোটকর্মীদের আনা-নেওয়ার জন্য গাড়ি লাগবেই। তাই স্কুলবাসগুলিকে না নিলেও উপায় নেই। প্রয়োজনে স্কুল কর্তৃপক্ষকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। যে সমস্ত স্কুলের ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা হবে, প্রয়োজনে তাদের স্কুল ছুটি দেবেন বলেই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। জেলাশাসক পুনীত যাদব বলেন, “ভোটের জন্য গাড়িগুলি প্রয়োজন হচ্ছে। পুলিশ ফোর্স আনা নেওয়ার জন্য আগে থেকেই গাড়িগুলি লাগছে। অনেক স্কুল বন্ধ থাকছে। যে সমস্ত স্কুল ওই সময় খোলা থাকছে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। প্রয়োজনে কয়েকদিন তাঁরা স্কুল ছুটি দেবেন। তা ছাড়া অন্য উপায় নেই।”

Advertisement

নির্বাচনের কাজে যুক্ত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপ দাস জানান, ভোট কর্মীদের নিতে তারা ১৫-১৭ এপ্রিল বাস নিচ্ছেন। অন্য দিনের জন্য তাঁরা কোনও বাস নিচ্ছেন না। তবে বাইরে থেকে পুলিশকর্মী আনার জন্য পুলিশের তরফে ১০ এপ্রিল থেকেই বাস প্রয়োজন হচ্ছেন। সেই মতো তাঁরা স্কুলবাসগুলিকে জানিয়েও দিচ্ছেন। তবে পাহাড়ের জন্য শিলিগুড়ি থেকে কোনও তারা নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।

পুলিশ কমিশনার জগ মোহন বলেন, “আমাদের ৬০টির মতো বাস দরকার হচ্ছে। জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের মাধ্যমেই স্কুলের গাড়িগুলিকে নেওয়া হচ্ছে। স্কুলগুলি যাতে বড় ধরনের সমস্যায় না পড়ে তা দেখা হচ্ছে।” তবে পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য, নির্বাচনের জন্য গাড়ি নেওয়ায় একটি-আধটু অসুবিধা হতে পারে। তিনি আশা করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।

পাহাড়ে শিলিগুড়ি থেকে কোনও বাস নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী। শিলিগুড়ি শহরের কোন স্কুলের কত বাস ভোটের কাজে ব্যবহারের জন্য নেওয়া হচ্ছে, তা নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকেই দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান। অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক সন্দীপনবাবু বলেন, “ভোটের কাজে গাড়ি নেওয়ার জন্য কোনও স্কুল বন্ধ রাখতে হলে তা প্রশাসনিক ব্যর্থতা। প্রশাসনেরই উচিত স্কুলবাসগুলিকে ছাড় দিয়ে ব্যবস্থা করা। যাতে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা না হয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement