শিলিগুড়ি পুরসভায় ‘মিউটেশন ফি’ জমা দিতে গেলে এক ব্যক্তির কাছ থেকে বাড়তি তিন হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দফতরের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। চাপের মুখে পরে অবশ্য তা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার পুরসভায় মিউটেশন ফি জমা করতে যান রাধেশ্যাম মাহাতো নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগ, দফতরের কর্মী বিশ্বজিত্ বিশ্বাস তাঁকে জানান, মিউটেশনেপাঁচ হাজার টাকা লাগবে। ওই ব্যক্তি পাঁচ হাজার টাকা দিয়েও দেন। অথচ রসিদ হাতে পেয়ে তিনি দেখেন, তাতে প্রথমে ১৬৫৫ টাকা জমার হিসেব লেখা হয়েছে। পরে ইংরেজি হরফে ১ সংখ্যাটিকে ৪ করা হয়েছে। ভাষায় যেখানে ওয়ান থাউজেন্ড লেখা হয়েছিল তার উপর কলম চালিয়ে ফোর থাউজেন্ড লেখা হয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় ওই ব্যক্তি পুর কমিশনারের দফতরে মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানান। এর পরেই পুর কমিশনার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ডেকে পাঠান। শুক্রবার রাধেশ্যামকে পুরসভায় ডেকে বাড়তি টাকা ফেরত দিয়ে দেন অভিযুক্ত কর্মী। অভিযুক্ত বিশ্বজিত্বাবুর দাবি, “প্রথমে পাঁচ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। তবে অত টাকা লাগেনি। তাই পরে টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার আগে উনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন। আমি সে সময় ছিলাম না।” তা হলে কেন তিনি ৪৬৫৫ টাকার রসিদ দিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি ওই ব্যক্তি। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া জানান, তাঁর দফতরে মৌখিক ভাবে রাধেশ্যাম মাহাতো নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ জানিয়েছেন। সেই মতো সংশ্লিষ্ট বিভাগকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা ফেরতও দেওয়া হয়েছে। তবুও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। মিউটেশন বিভাগে পাঁচ নম্বর বরো ও পুরসভার মূল অফিসের কর্মীদের একাংশের কাজকর্ম নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। কর্মীদের একাংশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিউটেশন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে মোটা টাকা আদায় করছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। ফের এ ধরনের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় কর্মী-আধিকারিকের একাংশ অসন্তুষ্ট। অনেকেই জানান, এক জনের ক্ষেত্রে অনৈতিক কাজ ধরা পড়লেও অনেকের কাছ থেকেই এ ভাবে টাকা নেওয়া চলে। অনেকে মিউটেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্বিঘ্নে করার জন্য বাড়তি টাকা চাওয়া নিয়ে আপত্তি তোলেন না। কিন্তু দফতরে কর্মীদের একাংশের এই অনৈতিক কাজ নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকেই।