বেহাল শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার, উদাসীন কর্তৃপক্ষ

আবর্জনার স্তূপ। থার্মোকল পড়ে রয়েছে চারিদিকে। পচে যাওয়া মাছ পড়ে রয়েছে। সব্জি, ফলের খোসা ইতিউতি। তার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে গরুর পাল। কাক, পক্ষীতে সেখান থেকে খুঁটে খুঁটে খাবার খাচ্ছে। তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। সামনের রাস্তা দিয়ে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে গেলেও গা গুলিয়ে যায়। মাসের পর মাস ধরে এই একই চেহারায় পড়ে রয়েছে শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। যে বাজারে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৭
Share:

শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজারের এমনই দশা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

আবর্জনার স্তূপ। থার্মোকল পড়ে রয়েছে চারিদিকে। পচে যাওয়া মাছ পড়ে রয়েছে। সব্জি, ফলের খোসা ইতিউতি। তার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে গরুর পাল। কাক, পক্ষীতে সেখান থেকে খুঁটে খুঁটে খাবার খাচ্ছে। তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। সামনের রাস্তা দিয়ে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে গেলেও গা গুলিয়ে যায়। মাসের পর মাস ধরে এই একই চেহারায় পড়ে রয়েছে শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। যে বাজারে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হন। যেখানে প্রতিদিন কোটি টাকার ব্যবসা হয় তার ওই বেহাল দশা নিয়ে একাধিক বার ব্যবসায়ীরা সরব হলেও কেউ নজর দিচ্ছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির পক্ষে থেকে দাবি করা হয়েছে, নিয়ন্ত্রিত বাজারের আবর্জনা পরিষ্কারের দায়িত্ব শিলিগুড়ি পুরসভার। সমিতির সচিব সুব্রত দাস বলেন, “এখন থার্মোকলের মধ্যে সমস্ত জিনিসপত্র আনা হয়। সেগুলি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। পুরসভা আবর্জনা পরিষ্কারের দায়িত্বে রয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগোযোগ করা হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে ওই আবর্জনা দ্রুত পরিষ্কার করা যায়।” শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার সোনম ভুটিয়া নিয়ন্ত্রিত বাজার পরিষ্কারে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “আমরা নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার করি। ওখানে কেন আবর্জনা পড়ে রয়েছে তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শিলিগুড়িতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে নিয়ন্ত্রিত বাজার। সেখানে সকালে পাইকারি বাজার বসে। মাছ, সব্জি, ফল সহ সমস্ত কিছুর জন্য আলাদা আলাদা জায়গা রয়েছে। সেখানে সবসময়ের জন্য কয়েকশ ব্যবসায়ী ও কর্মীরা থাকেন। সকালে যখন পাইকারি বাজার বসে সে সময় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা হাজির হন। তাঁদের অভিযোগ, বাজারের প্রত্যেকটি গলিতে আবর্জনা পড়ে রয়েছে। নিকাশি বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। নোংরা দিয়ে নিকাশির নালা বন্ধ হয়ে রয়েছে। কোথাও সব্জি-ফলের খোসা দিয়ে তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। কোথাও থার্মোকল, নানা ধরণের কাগজ দিয়ে তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। গোটা বাজারে ছড়িয়ে রয়েছে আবর্জনা। সব থেকে খারাপ অবস্থা মাছ বাজারের। মাছ বাজারের সামনে একটি জায়গায় অস্থায়ী ভাগাঢ়ে পরিণত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেখানে আবর্জনা স্তূপ করা হয়েছে। থার্মোকল বাদেও সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে পচা মাছ সহ নানা আবর্জনা। ওই এলাকা দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছে।

Advertisement

ওই এলাকার সামনে হোটেল রয়েছে প্রধাননগরের বাসিন্দা লাল সিংহের। তিনি অভিযোগ করেন, ওই নোংরার জন্য হোটেলে অসংখ্য মাছি ঘুরে বেড়ায়। তিনি বলেন, “যা অবস্থা তাতে এখানে দোকান চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। গন্ধে থাকা যায় না। দোকানে লোকজন কম আসছে। এই অবস্থা নিয়ে বারবার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিকে জানিয়েছি। কোনও লাভ হয়নি। তাই এর মধ্যে বসি থাকি।” মাছ বাজারের এক কর্মী রাজেন্দ্র প্রসাদ জানান, কাজের জন্য তাঁকে প্রায় সারা দিন ওই এলাকায় থাকতে হয়। তিনি বলেন, “এত দুর্গন্ধ থাকা সত্বেও কেন যে কেউ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বুঝতে পারি না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement