পুলিশের সামনেই বাম সমর্থিত প্রার্থীদের অপহরণ করে সমবায় ভোটে জেতার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে জেলা হোলসেল কনজিউমার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটির নির্বাচনে ঘটনাটি ঘটেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাদের চার প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ করেছে সিপিএম। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। স্থানীয় বিডিও বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, “সমবায়ের ভোটে ৯ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।”
জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ দিন গঙ্গারামপুর পুরসভা ভবনে দুপুর ১২ টা থেকে ২ টো পর্যন্ত ওই সমবায়ের নির্বাচন ছিল। ভোটার ছিলেন ৩১ জন, প্রার্থী ৯জন।
বামেদের অভিযোগ, ভোট প্রক্রিয়া শুরু হতেই অপহরণের ঘটনা ঘটে। তাঁরা জানান, সকাল ১০টা নাগাদ তাঁদের প্রার্থীরা ভবনে ঢুকে যান। জেলাপরিষদের বিরোধী নেতা মোফাজ্জল হোসেনও প্রার্থী হিসেবে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। পুলিশও ছিল। অভিযোগ, যুব তৃণমূল নেতা রতন ঘোষের নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল ভবনে ঢোকে। তাঁদের দাবি, কিছুক্ষণ পরে থানা থেকে এক পুলিশ অফিসার এসে বামপ্রার্থীদের বলেন, এখন এই চত্বরে থাকা যাবে না। ভোট দেওয়ার সময়ে তারা এখানে আসতে পারবেন মাত্র। সকলে রাস্তায় বার হয়ে আসতেই তৃণমূলের ওই দলটি প্রার্থীদের ঘিরে ধরে হুমকি ও ধাক্কাধাক্কি করতে থাকেন। দলটি মারমুখী হতেই পাঁচজন প্রার্থী ভয়ে দৌড়ে চলে যান। তাঁরা যাতে আর না আসেন সেই জন্য নজরদারি চালানো হয় বলেও অভিযোগ। সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাসের অভিযোগ, “ধাক্কাধাক্কির মাঝে সমবায়ের বাকি চার বামপ্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, আয়ুব আলি বেগ এবং শোভারানি রায়কে তৃণমূল বাহিনী একটি অটোতে জোর করে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” মোফাজ্জল হোসেন বলে, “ভোটকেন্দ্র থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রতনপুর এলাকায় একটি ফ্লাড শেল্টারের ভিতরে আমাদের আটকে রাখা হয়। মোবাইল ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়। দুপুর ২টো নাগাদ ছাড়া হয়। কেউ আর সময়মত সেখানে পৌঁছতে পারিনি।”
নারায়ণবাবু জানান, প্রার্থীরা পরে যখন এসেছে, ততক্ষণে ওই সমবায়ে ১৪ জনের ভোটে তৃণমূল সমর্থিত ৯ জন প্রার্থী জিতে যান। বাম সমর্থিত কোনও প্রার্থী ভোট দিতে পারেননি। অপহরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন যুব তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা অভিযুক্ত রতন ঘোষ। তিনি বলেন, “সমবায়ের মতো সামান্য ভোটে বিরোধী প্রার্থীকে অপহরণ করে জেতার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি আমাদের। আর ঘটনার সময় আমি ছিলামই না। ভোটে সিপিএমের হার নিশ্চিত ছিল। তাই ভিত্তিহীন গল্প তৈরি করা হয়েছে।” দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র অবশ্য বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “কী হয়েছে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।”