বিধান রোডে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের সামনে নির্মীয়মাণ বাণিজ্যিক ভবনকে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
শহরের নানা এলাকায় ‘বিতর্কিত’ নির্মাণ নিয়ে ক্রমশ জনমত দানা বাঁধছে শিলিগুড়িতে। ইতিমধ্যেই আন্দোলনে নেমেছে শিলিগুড়ি নাগরিক সমিতি। সোমবার শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে সমিতির তরফে জানানো হয়, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব যে ভাবে শহরকে পরিচ্ছন্ন ও যানজট মুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছেন তাতে আশার আলো দেখছেন তারা। উপরন্তু, শিলিগুড়ির হাসমিক চক লাগোয়া বিধান রোডের পাশের রাস্তা ঘেঁষে যে বিশাল বাণিজ্যিক ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বাম আমলে তা পুনর্বিবেচনার ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী সম্মতি দেবেন বলে সমিতি আশা করছে।
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন ‘সাথী বিল্ডার্স-এর সঙ্গে সমঝোতাপত্রের মাধ্যমে ওই বাণিজ্যিক নির্মাণ শুরু হয়। কিন্তু, এখন অশোকবাবুও মানছেন, ‘ওই জায়গায় বাণিজ্যিক নির্মাণ না হলেই ভাল হতো।’ তাই শহরবাসীদের পক্ষে অনেকেই নাগরিক সমিতির কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, বাম আমলের ভুল সিদ্ধান্তের মাসুল এখন কেন শিলিগুড়ির বাসিন্দারা দেবেন?
সমিতির পক্ষে সম্পাদক দুর্গা সাহা বলেন, “শহরে অনেক বিতর্কিত নির্মাণ রয়েছে। তা নিয়ে মন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত। তবে মন্ত্রী হাসমি চকের ওই বহুতল নির্মাণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করলে শিলিগুড়ি গোটা দেশের কাছে দৃষ্টান্ত হতে পারে। বাণিজ্যিক স্বার্থের কথা না ভেবে জনস্বার্থে এসজেডিএ-এর বর্তমান চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ওই পদক্ষেপ করলে শিলিগুড়ি আজাবীন কৃতজ্ঞ থাকবে বলে আমরা মনে করি।” নাগরিক সমিতির সভাপতি সুজিত বসু, খোকন ভট্টাচার্য সহ অনেকেই। গাড়ি পার্কিং সমস্যা, যানজট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাঁরা মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করবেন। সকাল ৯টার জলপাইগুড়িগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের পরিবর্তে শিলিগুড়ি জংশন থেকে ছাড়ার দাবিতে ডিআরএমের দ্বারস্থও হবেন তাঁরা।
এক দশক আগে ওই ভবনটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নির্মাণ শুরু হয়। প্রথমে পার্কিং এলাকা করা হবে বলে রেলের কাছ থেকে জায়গাটা কিনে নিয়েছিল শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। প্রথম থেকেই বিতর্ক দানা বাঁধে। ওই সময়ে যুব কংগ্রেসের আন্দোলনের জেরে পুরভোটের প্রাক্কালে নির্মাণের কিছুটা ভেঙে রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়তে হয় নির্মাতা সংস্থাকে। কিন্তু, একন যে ভাবে নির্মাম হচ্ছে তাতে শহরের অন্যতম প্রধান রাস্তার সঙ্গে ওই বাণিজ্যিক ভবনের সিঁড়ির মধ্যে সামান্য ফাঁক রয়েছে। ফলে, রাস্তায়র ধারে চলাফেরার জায়গা থাকছে না। দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন নিত্যযাত্রীরা। যদিও নির্মাতা সংস্থার তরফে নিরঞ্জন মিত্তল গোনা থেকেই দাবি করছেন, তাঁরা সরকারি নিয়ম মেনেই কাজ করছেন।
এই অবস্থায়, নাগরিক সমিতির তরফে ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানোর প্রসঙ্গে নির্মাতা সংস্থার মুখপাত্র রতন বেনিপুরী বলেন, “আমরা এসজেডিএ-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে ওই বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করছি। রাজ্য সরকার আমাদের সহযোগী। এখন এসজেডিএ যদি ভাবে আমাদের যা খরচ হয়েছে সেটা দিয়ে দেবে তা হলে আমরা আর এগোব না।”