সদস্য জোগাড়ের জন্য কোচবিহার সফরে এসে তৃতীয় দিনে মোটের উপর মাঝারি মাপের সাড়া পেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। সোমবার তৃণমূল সহ অন্যান্য দলের বেশ কয়েকজন প্রাক্তন পদাধিকারী বিজেপিতে সামিল হলেও পুর স্তরের কয়েকজন নেতা তাদের হতাশ করেছেন বলে দল সূত্রে খবর।
তুফানগঞ্জের সুপার মার্কেট ও কোচবিহার শহরের পুরাতন পোস্ট অফিসপাড়া ময়দানে দুটো সভাই ছিল ছোট মাঠে। দলের কর্মী সমর্থকরাই মাঠ ভরিয়ে দেন। তবে বিজেপিতে সামিল হওয়ার ধারায় খুশি রাহুলবাবু আবারও বললেন, “যাঁরা লুঠ, তোলাবাজির রাজনীতি চান না তাঁরা বিজেপিতে আসুন। ২০১৬ সালে প্রকৃত পরিবর্তনের জন্য সকলকে তৈরি হতে হবে। কোচবিহার পুরসভাতেও বিজেপিকে আনুন।” তৃণমূলের শুদ্ধিকরণ কর্মসূচি নিয়েও কটাক্ষ করলেন। তাঁর কথায়, “ঠগ বাছতে গা উজাড় হওয়ার জোগাড় হচ্ছে। আর অসত্ মানুষ দিয়ে শুদ্ধিকরণ হতে পারে না।”
তৃণমূলের পাশাপাশি কংগ্রেস-সহ অন্য দল ছেড়েও বহু মানুষ তাঁদের দলে যোগ দিচ্ছেন বলে এ দিনও বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এদিন পুরাতন পোস্ট অফিসপাড়ার সভামঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সহ-সভাপতি সন্তোষ মুখোপাধ্যায় ও কোচবিহার ২ ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য রামপ্রসাদ মণ্ডল বিজেপিতে যোগ দেন। ২০০৯ সালে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের কেপিপি প্রার্থী পৃথ্বীরাজ রায়ের হাতেও আনুষ্ঠানিকভাবে দলের পতাকা তুলে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তার আগে এদিন দুপুরে তুফানগঞ্জে আয়োজিত সভায় ২০০৬ সালে কংগ্রেসের বিধানসভা প্রার্থী তথা তুফানগঞ্জের প্রাক্তন যুব কংগ্রেস সভাপতি বিভাস সেনইশোর, চিলাখানা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান মনোজ বর্মা বিজেপিতে যোগ দেন।
বিজেপি সূত্রের খবর, এ দিন দলে যোগ দেওয়া সন্তোষ মুখোপাধ্যায় কোচবিহারের প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে অন্যতম। সত্তরের দশকে তিনি যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ছিলেন। তৃণমূল প্রতিষ্ঠার পর নব্বইয়ের দশকে দীর্ঘদিন কোচবিহারের জেলা সহ সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে জেলার রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই ‘ব্রাত্য’ হয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। মনোজ বর্মা তুফানগঞ্জের চিলাখানা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট পাননি। তিনি নির্দল হিসাবে লড়াই করে হেরে যান।
এই দলবদল নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বক্তব্য, “দলবিরোধী কাজের অভিযোগে গত পঞ্চায়েত ভোটের আগেই মনোজ বর্মাকে বহিষ্কার করা হয়। আর সন্তোষবাবু তো দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে নিষ্ক্রিয়। ফলে এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।” আর জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরীর বক্তব্য, “দলের কর্মসূচিতে যাদের পাঁচ জন লোক আনার ক্ষমতা নেই, তারাই মূলত বিজেপিতে যাচ্ছেন।”