ফেসবুকে তরুণীর নামে ভুয়ো প্রোফাইল খুলে আপত্তিকর কাজকর্ম করার অভিযোগে ধৃত মূল অভিযুক্ত শাহবাজ আলমের ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দিল আদালত। অন্য আর এক ধৃত মহম্মদ ওয়াকার আলিকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার তাকে শিলিগুড়ি আদালতে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত তরুণীর ছবি দিয়ে ভুয়ো এমএমএস ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই এমএমএস তৈরিতে তার ভূমিকা খতিয়ে দেখবে পুলিশ। তার হেফাজত থেকে উদ্ধার হওয়া কম্পিউটারটি বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা করানো হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিন জেলা আইনি পরিষেবা সমিতির সভাপতি তথা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অজয়কুমার দাস ও রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য জ্যোত্স্না অগ্রবালের সঙ্গে বাবা ও মাকে নিয়ে দেখা করেন ওই ছাত্রী। দু’জনেই তাঁকে সব রকম আইনি সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিন জ্যোত্স্নাদেবী বলেন, “পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। প্রয়োজন হলে সমস্ত রকম সাহায্য করব।”
শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি তপনআলো মিত্র বলেন, “ওয়াকারকে জেরা করা হবে। প্রয়োজনে ওই ছাত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্ত সঠিক পথেই চলছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, গোটা ঘটনায় শাহবাজ ও ওই ছাত্রীর কয়েকজন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে পুলিশ। সাহায্যের আশ্বাস মিলেছে আইনি পরিষেবা সমিতির পক্ষ থেকেও। দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, “আইনি পরিষেবা সমিতির পক্ষ থেকে সভাপতি সব সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।” তদন্তের সময় মহিলা পুলিশকর্মী থাকার ব্যপারে পুলিশকে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান অমিতবাবু। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকেই একাধিক নম্বর থেকে ওই ছাত্রীর মোবাইলে ফোন করে উত্ত্যক্ত করতে থাকে কিছু যুবক। অশালীন উক্তিও করে কেউ কেউ। প্রথমে বুঝতে না পারলেও গত জানুয়ারিতে তিনি জানতে পারেন, ফেসবুকে একটি ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে তাঁর ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনা জানিয়ে প্রধাননগর থানায় ১৭ জানুয়ারি সব অভিযোগ লিখিতভাবে জানান। গত সপ্তাহে শহরের সূর্য সেন কলেজের সামনে তাঁকে একা পেয়ে তাকে মারধর করে অভিযুক্ত বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থল থেকে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পরে প্রধাননগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয় অভিযুক্তকে। গোটা ঘটনা বিচার করে পরে তা গোয়েন্দা বিভাগের হাতে মামলাটি তুলে দেওয়া হয়। অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর ২০১২-র গোড়ায় আলাপ ও বন্ধুত্ব হয় বলে জানা গিয়েছে। কয়েক মাস পর থেকে শাহবাজের আচার আচরণ পছন্দ না হওয়ায় সম্পর্ক রাখতে ওই ছাত্রী আগ্রহী ছিলেন না বলে জানান।