শিলিগুড়ি বাঁচাও শ্লোগানে আন্দোলন বামেদের। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের মর্জিমাফিক কাজকর্মের জেরে শহরের নাগরিক পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে অভিযোগ তুলে ‘শিলিগুড়ি বাঁচাও’ আন্দোলনের ডাক দিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। শনিবার বিকেলে শিলিগুড়ির এয়ারভিউ মোড়ে এক সভার পরে শহর জুড়ে মিছিল করেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। মিছিলের শুরুতে সিপিএমের দার্জিলিং জেলার কার্যকরী জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন,“ সকাল থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী যে সব কাজ করেন তার ক’টা যুক্তিগ্রাহ্য তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ আছে। কারণ, পুরসভা অচল করে তিনি নিজের কর্তৃত্ব কায়েম করেছেন। মহকুমা পরিষদের ভোটও করাচ্ছেন না। শহরের মানুষ পানীয় জল, সাফাই পরিষেবা পান না। রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেটের জন্য হয়রান হচ্ছেন গরিব মানুষরা।”
তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ওই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন। মন্ত্রীর দাবি, “আমি টানা উন্নয়নের কাজ করছি। পরিষেবার ঘাটতি এতদিন যা ছিল সেটা মিটিয়ে আরও উন্নত করছি। তাই আমাকে আক্রমণ করা হচ্ছে।” সেই সঙ্গে তিনি পুর এলাকায় কী ধরনের উন্নয়নের কাজকর্ম চলছে সেই বিবরণ দেন। তাঁর কথায়,“রাস্তার হাল ফিরছে। পানীয় জলের সরবরাহ ঠিকঠাক হচ্ছে। রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট বরো অফিসে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স, এলইউসিসি, বিল্ডিং প্ল্যানের আবেদনপত্র বাড়িতে বসেই জমা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।”
এদিন বিকেল সাড়ে চারটায় শিলিগুড়ির মহানন্দা মোড়ে জমায়েত করে সিপিএমের শিলিগুড়ি জোনাল কমিটি। সেখানে জীবেশবাবু ছাড়াও বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন মেয়র নুরুল ইসলাম, শিলিগুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক মুকুল সেনগুপ্ত প্রমুখ। জমায়েতের পর একটি মিছিল হিলকার্ট রোড হয়ে শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের জেরে হিলকার্ট রোডের একদিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিন সিপিএমের তরফে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়ের করা দুর্নীতি মামলা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়। ওই তদন্তে কোনও অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা এসজেডিএ-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “এসজেডিএ মামলার তদন্ত শুরু করেছিলেন যিনি, সেই পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই থেকে নতুন করে কেউ গ্রেফতার হয়নি। যাঁরা টাকা নয়ছয়ের ছক কষেছিলেন বলে অভিযোগ, সেই নেতা-কর্তাদের একজনও গ্রেফতার হননি।” এর পরেই অশোকবাবু দাবি করেন, শিলিগুড়িকে বাঁচাতে গেলে আগামী দিনে শহরবাসীকে জোটবদ্ধ ভাবে লড়তে হবে।
আজ, রবিবার বিকেলে সিপিএমের ডাবগ্রাম জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে শিলিগুড়ি বাঁচাও কর্মসূচি পালন করা হবে। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের।