পাতার দাম নেই, আন্দোলনে চা চাষি

কাঁচা পাতার দাম না পেয়ে আন্দোলনে নামলেন চা চাষিরা। বুধবার জলপাইগুড়ি শহরর রাস্তায় পাতা ফেলে চা পর্ষদের দফতর অবরোধ করে ন্যুনতম দাম বেঁধে দেওয়ার দাবি জানালেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৪ ০১:৪৬
Share:

কাঁচা পাতার দাম না পেয়ে আন্দোলনে নামলেন চা চাষিরা। বুধবার জলপাইগুড়ি শহরর রাস্তায় পাতা ফেলে চা পর্ষদের দফতর অবরোধ করে ন্যুনতম দাম বেঁধে দেওয়ার দাবি জানালেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, চা পর্ষদের উদাসীনতার সুযোগে বটলিফ ফ্যাক্টরির কর্তারা পাতার এমন দাম ঠিক করছেন, যে উত্‌পাদন খরচ ওঠে না।

Advertisement

যদিও ভারতীয় চা পর্ষদের কর্তারা সহকারী অধিকর্তা অমৃতা চক্রবর্তী বলেন, “ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার জন্য কাঁচা পাতার ন্যূনতম দাম ১৫ টাকা ২৩ পয়সা কেজি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও পাতার দাম সহ অন্য সমস্ত বিষয় পর্যালোচনার জন্য মনিটরিং কমিটির সভা ডাকার চেষ্টা চলছে।” পর্ষদ কর্তাদের ওই বক্তব্য শুনে শতাধিক ক্ষুদ্র চা চাষি এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন দফতরের সামনে বস্তায় বস্তায় কাঁচা চা পাতা ফেলে স্লোগান দিতে শুরু করেন। বেলা ২টো থেকে দফায় দফায় ওই বিক্ষোভ চলে। বিকেল ৬টা নাগাদ পর্ষদ কর্তারা আলোচনায় বসে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে অবরোধ আন্দোলন উঠে যায়।

চাষিদের দাবি, ১ কেজি পাতা উত্‌পাদন করতে প্রায় ১৫ টাকা খরচ হয়। এটা জানার পরেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পাতার ন্যূনতম দাম ১৫ টাকা ২৩ পয়সা কেজি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি’ সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলার ২০ হাজার বাগান থেকে বছরে ৩০ কোটি কেজি কাঁচা পাতা উত্‌পাদন হচ্ছে। জেলার ৬৪টি বটলিফ ফ্যাক্টরিতে চাষিরা ওই পাতা বিক্রি করেন। ১০ দিন আগেও কেজি প্রতি পাতার দাম ছিল ১৯ টাকা। ক্রমশ কমে সেটা এখন ১২ টাকায় দাঁড়িয়েছে। নানা অছিলায় অনেক ক্ষেত্রে পাতার দাম ৮ টাকা কেজি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

Advertisement

সংগঠনের জেলা সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “বটলিফ ফ্যাক্টরির কর্তারা কোন নিয়ম মানছেন না। ইচ্ছে মতো দাম নির্ধারণ করছেন। এসব দেখেও চা পর্ষদব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে উদ্বেগে রয়েছি।” ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সমস্ত অভিযোগ অবশ্য ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন উত্তরবঙ্গ বটলিফ ফ্যাক্টরি মালিক সংগঠনের সভাপতি সঞ্জয় ধনুটিয়া। তিনি বলেন, “পাতার গুণগত মানের উপরে দাম নির্ভর করে। ভাল মানের পাতা বুধবার জলপাইগুড়িতে ১৬ টাকা কেজি দামে বিক্রি হয়েছে।” বটলিফ ফ্যাক্টরি মালিকরা জানান, দীর্ঘ অনাবৃষ্টির ফলে এ বার প্রতিটি চা বাগানে কম বেশি ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পরে যে পাতা উঠছে সেটার বেশির ভাগ ভাল মানের পাতা নয়। চড়া দামে ওই পাতা কিনে চা তৈরি করে খরচ উঠবে না। তাই কম দামে কিনতে হচ্ছে বলে মালিকপক্ষের দাবি।

মজুরি বাড়াতে আন্দোলন
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালবাজার

চা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে মালিকপক্ষের ওপর চাপ বাড়াতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে চা বাগানে সভা, গেট মিটিঙ আয়োজিত হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠন ছাড়া অন্যান্য সব কটি চা শ্রমিক সংগঠন। গত ২১জুন ডুয়ার্সের চালসায় সভা করে যৌথ মঞ্চে তৈরি করে ১৭টি শ্রমিক সংগঠনের কো-অর্ডিনেশন কমিটি, ৪টি সংগঠনের ইউনাইটেড টি ওয়ার্কার্স প্ল্যানটেশন ছাড়াও আদিবাসী বিকাশ পরিষদের চা শ্রমিক সংগঠনের মতো বেশ কয়েকটি সংগঠন একযোগে আন্দোলনের ডাক দেয়। মজুরি বাড়াবার জন্যে উত্তরকন্যায় আয়োজিত ১৮ জুনের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর ফের ২০ দিন পর ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হবে বলে জানায় শ্রম দফতর। আজ বৃহস্পতিবার পাহারা, তরাই , ডুয়ার্স সর্বত্র চা বাগানে সভা এবং গেট মিটিঙের ডাক দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩ জুলাই দার্জিলিঙ, বাগডোগরা, শিলিগুড়ি, মালবাজার, বানারহাট, কালচিনিতে একযোগে জনসমাবেশও করবে মঞ্চ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement