কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে আইএনটিটিইউসি’র সভায় কর্মীদের নিয়ে আসা সেই বাস। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার রুটের বাস নিয়ে সংগঠনের বৈঠকে যোগ দিতে আসার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ অ্যান্ড তৃণমূল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যদের একাংশের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম হলে সংস্থার ২১ টি ডিপোর প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই সম্মেলন হয়। সংগঠনের সভাপতি দোলা সেন। বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদহ, দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, বহরমপুর ডিপোর মতো বিভিন্ন জায়গায় সংগঠনের শাখার প্রতিনিধিরা। সংগঠনের সদস্যদের একাংশ জানান, মালদহ, রায়গঞ্জ এলাকা থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের একাংশ কর্মীরা ওই বাস নিয়ে এসেছিলেন। সেটি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের কাছে সুইমিং পুলের ধারে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। বেলা ৩টা নাগাদ ফের তাতে করে ফেরেন কর্মীরা। বাসের ভিতরে তৃণমূলের দলীয় পতাকাও ছিল।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংগঠনের রাজ্য কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দিলীপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, “সংগঠনের কিছু সদস্য এ রকম রুটের বাস নিয়ে এসেছেন বলে জানা নেই।” মালদহ রায়গঞ্জ ডিপোর কর্মীরাও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এনবিএসটিসি-র শিলিগুড়ি ডিভিশনের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই গাড়িটি এই ডিভিশনের নয়। আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন রায়গঞ্জ বা মালদহ ডিপোর গাড়ি নিয়ে আসা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অনেক গাড়ি তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস হয়ে কোর্ট মোড় পর্যন্ত যায়। টার্মিনাসে বাসটি দাঁড় না করিয়ে হয়তো কোর্ট মোড় পর্যন্ত গিয়ে স্টেডিয়ামে সুইমিং পুলের কাছে দাঁড় করানো হয়েছে।
এ দিন বৈঠক সেরে দোলা জানান, এটি এনবিএসটিসি-র কর্মী ইউনিয়ন কমিটির বৈঠক। সব ডিপোর প্রতিনিধিরাই ছিলেন। এনবিএসটিসি-র পরিস্থিতি ধীরে হলেও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তিনি বলেন, “বাম জমানায় এনবিএসটিসি যে পরিস্থিতির মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছিল, সেই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব সংস্থার চেয়ারম্যান। এর আগে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ চেয়ারম্যান ছিলেন। দোলা জানান, তাঁদের চেষ্টায় গাড়ি বেড়েছে, টিকিট বিক্রি বেড়েছে। তবু কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। সংস্থার উন্নয়নের জন্য সে সমস্ত কর্তৃপক্ষকে জানানো দরকার। ২১ জানুয়ারি তাই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করে ওই সমস্ত বিষয়ে তাঁকে জানানো হবে। কর্মীদের উন্নয়নের জন্য তাঁদের কিছু দাবিদাওয়ার বিষয় রয়েছে। এ দিন বৈঠকে ওই বিষগুলি নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এ দিন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম হলে সংগঠনের বৈঠকে যোগ দিতে এসে কর্মীদের অনেকেই নিজেদের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, এ নিয়ে চার বার সংগঠনের বৈঠক ডাকা হল, অথচ সংগঠনের কমিটি সঠিক ভাবে তৈরি হয়নি। যার জন্য কর্মীদের দাবিদাওয়া নিয়ে ডিপো ম্যানেজার বা আধিকারিকদের কাছে গেলে সেখানে সংগঠনের ‘প্যাড’ ব্যবহার করে কেউ সই করতে পারছেন না। বারবার বৈঠক হচ্ছে কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। সমস্যার কথা অস্বীকার করেছেন সংগঠনের নেতৃত্ব।